শুক্রবার বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইতালির মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অন্তত ১০ ব্যক্তি নিহত ও আরও ৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ফলে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে।
মাত্র ২ ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে শহর ও গ্রামগুলো পানিতে ভেসে গেছে এবং সড়কগুলো যেন নদীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এজিআই সংবাদ সংস্থা প্রথমে মৃতের সংখ্যা ৭ জানালেও পরে দিনের মাঝামাঝি নাগাদ তা বেড়ে ১০ হয়।
এজিআই আরও জানিয়েছে, এর আগে নিখোঁজ হিসেবে বিবেচিত একজন শিশু তার মায়ের সঙ্গে গাড়িতে ছিল। মাকে উদ্ধার করা গেলেও শিশুটি বন্যার পানিতে ভেসে যায়।
দমকল বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ৩০০ কর্মী বন্যার মধ্যে কাজ করছেন এবং রাতভর উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে বাড়ির ছাদ ও গাছে আশ্রয় নেওয়া “কয়েক ডজন মানুষকে” বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অ্যাড্রিয়াটিকে অবস্থিত বন্দরনগরী অ্যানকোনা, যেখানে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শুক্রবার স্কুলগুলো বন্ধ ছিল।
অপর বন্দরনগরী সেনিগাল্লিয়ার সড়কগুলোও নদীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো ২৫ সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের অল্প কয়েকদিন আগে। সকল রাজনৈতিক মহল থেকে ভুক্তভোগীদের জন্য সান্ত্বনার বাণী এসেছে।
ফার রাইট ব্রাদার্স অব ইতালি দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী জর্জিয়া মেলোনি আক্রান্তদের সঙ্গে ‘পূর্ণ একাত্মতা’ প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হবার আশা করছেন।
ইতালিতে খরার পর এই বন্যা এসেছে, যার ফলে অনেকেই একে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে বিবেচনা করছেন। এ সমস্যাটি নির্বাচনী প্রচার অভিযানের সময়ে খানিকটা ধামাচাপা পড়েছে।
গত ৭০ বছরের মধ্যে এই বছর সবচেয়ে ভয়াবহ গ্রীষ্মের খরায় ইতালির সবচেয়ে বড় পানির উৎস পো নদী শুকিয়ে যায়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রখর রোদের পর ঝড় হয়েছে। ভূমিতে বন্যা আঘাত হানার পর মাটি শক্ত হয়ে কংক্রিটের মতো হয়ে গেছে।
জুলাই মাসে ইতালির সবচেয়ে বড় আলপাইন বরফখণ্ডের একটি অংশ ধ্বসে ১১ ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনার জন্যেও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেন সংশ্লিষ্টরা।