উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে দুই নিম্নবর্ণের হিন্দু দলিত বোনকে ধর্ষণ, হত্যা ও গাছে ঝুলানোর ঘটনায় ভারতজুড়ে ক্ষোভ ও শোকের সৃষ্টি হয়েছে।
লখিমপুর-খেরি জেলায় বুধবার সন্ধ্যায় ১৫ ও ১৭ বছর বয়সী দুই বোনদের লাশ একটি গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিশ্চিত করা হয়েছে যে ঐ কিশোরীদের ধর্ষণ করার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে ।
পুলিশ জানিয়েছে যে ২০ বছরের কোঠায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে দু'জনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল এবং অভিযুক্ত কয়েকজন আসামির সঙ্গে ঐ দুই বোন স্বেচ্ছায় মোটর সাইকেলে করে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের একটি আখের ক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার আগে তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে।
জেলার পুলিশ প্রধান সঞ্জীব সুমন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন ধর্ষণের পর “মেয়েরা জোর করে বলেছিল যে তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ তাদের বিয়ে করবে।”
তিনি বলেন, "ঐ লোকেরা তাদের বিয়ে করতে অস্বীকার করে এবং তারা একটি উত্তপ্ত তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা বোনদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।"
পাঁচজন মুসলিম ও একজন হিন্দুসহ ছয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে দুইজন অপরাধ স্বীকার করেছে বলে জানান সুমন।
যদিও পুলিশ জানিয়েছে যে মেয়েরা স্বেচ্ছায় অভিযুক্তদের সাথে তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে, তবে তাদের পরিবার অভিযোগ করেছে যে ঐ লোকেরা তাদের অপহরণ করেছিল।
পুলিশ তাদের পরিবারের কাছে মেয়েদের মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে। বৃহস্পতিবার তাদের গ্রামে তাদের পরিবার দাফন করেছে।
ক্ষব্ধ গ্রামবাসীরা নিকটবর্তী একটি প্রধান রাস্তা অবরোধ করে এবং দলিত বোনদের ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার ও সরকারি চাকরি দাবি করেছে মেয়েটির পরিবার।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর দেশটিতে ধর্ষণের ঘটনা ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে দলিতদের ধর্ষণের ঘটনা ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারের উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি অনেকগুলো হিসেব অনুযায়ী ভারতে মাত্র ১% থেকে ৩% ধর্ষণের খবর প্রকাশ পায়। সমালোচকরা বলছেন ধর্ষন-বিরোধী অনেক আইন থাকা সত্ত্বেও ভারতে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ বেড়েই চলেছে।
সরকার দোষীদের 'দৃষ্টান্তমূলক' শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।