অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইরানের সহিংস বিক্ষোভ এখনো চলছে, রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে ২৬ জন নিহত


 এক ব্যক্তি ২১ সেপ্টেম্বর এই ছবিটি তোলেন । এপি ইরানের বাইরে থেকে এই বিক্ষোভের ছবিটি সংগ্রহ করে।
এক ব্যক্তি ২১ সেপ্টেম্বর এই ছবিটি তোলেন । এপি ইরানের বাইরে থেকে এই বিক্ষোভের ছবিটি সংগ্রহ করে।

পুলিশের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস সংঘর্ষ শুক্রবার সকালেও অব্যাহত ছিল। ইরানের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত টিভি জানিয়েছে, বিক্ষোভে সর্বোচ্চ ২৬ জন প্রাণ হারিয়ে থাকতে পারেন। তারা বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি।

ইরানের প্রায় ১ ডজন শহর ও নগরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লেও এর প্রকৃত বিস্তার সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এটি ২০১৯ সালের পর সবচেয়ে বড় আকারের বিক্ষোভ। তখন অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছিল যে সহিংস অভিযানে শত শত লোক নিহত হন। এবার একইসঙ্গে ইরান বহির্বিশ্বের সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রেখেছে। ইন্টারনেট ট্রাফিক নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান নেটব্লকস জানিয়েছে, দেশটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজনে ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত টিভির এক উপস্থাপক বৃহস্পতিবার দিনের শেষে জানান, গত শনিবার মাহসা আমিনির (২২) দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে ২৬ জন বিক্ষোভকারী ও পুলিশ নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন সরকারী ভাবে পরে সংখ্যা জানানো হবে তবে অতীতে এ রকম গোলযোগের সময়ে ইরানি সরকার সরকারি ভাবে নিহতের সংখ্যা জানায়নি।

দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, বিক্ষোভে অন্তত ১১ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। অতি সম্প্রতি কাজভিনের ডেপুটি গভর্ণর আবোলহাসান কাবিরিবলেন এই গোলযোগের সময়ে একজন বেসামরিক নাগরিক এবং আধা সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা নিহত হন।

বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে জনসম্মুখে কিছুটা চুল খোলা রাখার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ কুর্দিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এক শহরের বাসিন্দা আমিনিকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করেছিল। পুলিশের হেফাজতে তার মৃত্যু হওয়ার পর থেকে ইরানজুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ দাবি করেছে, তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এবং তার সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি। তবে তার পরিবার এই দাবিতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, অজ্ঞাতনামা বিদেশী রাষ্ট্র ও বিরোধী দলগুলো বিক্ষোভকে উসকে দিতে চাইছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীরা তেহরানে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন এবং খুব কাছে থেকে পুলিশের মুখোমুখি হচ্ছেন। ভিডিওতে দেখা গেছে রাজধানীতে অন্যত্র বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে এবং দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে বিক্ষোভকারিরা চিত্কার করে বলছেন, “ তারা জনগণের উপর গুলি চালাচ্ছে ! হায় খোদা তার লোকজনকে হত্যা করছে!”

এছাড়াও, বিক্ষোভকারীরা শ্লোগানে বলছেন, “একনায়কের মৃত্যু হোক” এবং “মোল্লারা বিদায় হোক।”

অর্থনৈতিক দারিদ্র্য ইরানের জনগণের রাগের বড় একটি উৎস। ইরানের মুদ্রার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন হচ্ছে এবং দেশটিতে বেকারত্বের হারও অনেক বেশি।

XS
SM
MD
LG