ইউক্রেনে যুদ্ধের পরিধি বাড়ানোর জন্য, বৃহস্পতিবার রাশিয়ার নিন্দা করেছেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। সদস্য দেশগুলো, ইউক্রেনে আরও সেনাসমাবেশ এবং পুতিনের পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকির সমালোচনা করে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনের বাইরে, আয়োজিত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের একটি বিশেষ সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন,"প্রতিটি কাউন্সিল সদস্যের উচিৎ এই সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া, যে, এধরনের বেপরোয়া পারমাণবিক হুমকি দেওয়া অবশ্যই অবিলম্বে বন্ধ হতে হবে।"
পুতিন বুধবার ঘোষণা করেন যে, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের জন্য তিনি ৩ লাখেরও বেশি নতুন সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছেন।
এছাড়া, রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করার উদ্দেশ্যে, ইউক্রেনের ৪টি দখলকরা অঞ্চলে গণভোটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়ার মিত্ররাও যুদ্ধের গতি-প্রকৃতির এমন ক্রমবর্ধমান অস্বস্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বলেন, "ইউক্রেন সংঘাতের যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তা সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।" তিনি বলেন, ভবিষ্যত দৃশ্যকল্পটা আরও উদ্বেগের বিষয়, বিশেষ করে পরমাণু ইস্যু একটি উৎকন্ঠার বিষয় হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে কোনো শর্ত আরোপ না করে আলোচনা শুরুর আহবান জানান। ওয়াং ই আলোচনায়, যৌক্তিক উদ্বেগ এবং কার্যকর বিকল্প যুক্ত করতে বলেন, যাতে আলোচনা ফলপ্রসু হয় এবং শান্তির পথে অগ্রগতি আসে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও উত্তেজনা বৃদ্ধি পরিহার করতে আহবান জানান।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সেনাসমাবেশ বা পুতিনের পারমাণবিক হুমকি নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তিনি বলেন, এগুলো হচ্ছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির " অতিমাত্রার রুশ-বিরোধী" বক্তব্যের ফলাফল। তিনি বলেছিলেন যে, যারা নিজেদের রুশ মনে করেন, তারা রাশিয়ায় চলে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “ আমাদের কোন সন্দেহ নেই , যে ইউক্রেন এখন পুরোপুরি সর্বাত্মকবাদী, নাৎসীদের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে. যেখানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের বিধানগুলো পদদলিত হচ্ছে।"
বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি মূলত ডাকা হয়েছিল, রুশ সৈন্য প্রত্যাহারের পর ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে তাদের নৃশংসতার যে চিত্র সামনে আসছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য।
বুচা, ইরপিন, মারিউপোল ও সম্প্রতি ইজিয়ামে বহু গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে।
লাভরভ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের জানান যে, বুচা একটি “ নেতিবাচক প্রচারণার অভিযান” এবং এটা যে সাজানো, সে বিষয়ে ‘কারও মনে কোনো সন্দেহ নেই”।