বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, “ইইউ বাজারে দ্রুত জিএসপি প্লাস পাওয়ার প্রস্তুতি, বাংলাদেশের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।”
রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি উল্লেখ করেন যে, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নীত হওয়ার অর্থ হল, বর্তমান এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) অবস্থান থেকে উন্নীত হওয়া। আর, ইইউ বাংলাদেশকে একতরফা বাণিজ্য অগ্রাধিকার দেয় এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ দেশগুলো।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অফ বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইইউ রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
চার্লস হোয়াইটলি বলেন, “গ্র্যাজুয়েশনের ফলে বাংলাদেশের জিডিপিতে একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ক্ষতি এবং গুরুতর ধাক্কা লাগবে। যা জিএসপি প্লাস ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কমানো যেতে পারে।”
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, আইবিএফবি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার, আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএস সিদ্দিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, “একক খাত আরএমজি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং শিল্প বৈচিত্র্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান আকৃষ্ট করা হবে। এটি করার জন্য দেশি-বিদেশি উভয় ক্ষেত্রেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রয়োজন। বিদ্যমান বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সমস্যার সমাধান করাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক সংলাপে এই এলাকার সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, “জিএসপি প্লাস-এ যোগদানের জন্য বেশ কিছু কঠোর মান্যতা রয়েছে এবং বড় বিষয় হল বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জিএসপি প্লাস সদস্য পদের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২টি কনভেনশন অনুমোদন করেছে। এখন পরবর্তী ধাপ হলো বাস্তবায়ন। এটি, বিশেষ করে শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নকে বোঝায়; যে বিষয়ে সরকার ইইউ-এর সঙ্গে একমত হয়েছে।”
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, “শ্রম সংস্কারের ওপর এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে উদীয়মান টেকসই প্রয়োজনীয়তা পূরণের দৌড়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উদ্যোগ ও পদ্ধতিকে সমর্থন করছি।”
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, “বাংলাদেশে ইইউ এফডিআই আশা জাগাচ্ছে। তবে, একই সময়ে ভিয়েতনামে ছয়শ’ কোটি ডলার ইইউ বিনিয়োগের তুলনায়, এটি এমন একটি দেশের জন্য আদর্শ নয়। এই দেশটিকে, মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে এবং অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখতে, ব্যাপক এফডিআই প্রবাহের প্রয়োজন হয়।”
“প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় বাধাই বাংলাদেশে ইইউ বিনিয়োগের সম্ভাবনা সীমিত করে।বিদেশি বিনিয়োগের বাধা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়;” উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।