আগামী বছরের অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়া, ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল। এর ফলে এমন আশা দেখা দিয়েছিল যে, সফলভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে, ২৭.৭ কোটি মানুষের এই দেশে খেলাটি দীর্ঘকাল ধরে যে সমস্যাগুলোতে জর্জরিত, সেগুলোর সমাধান হবে।
ইন্দোনেশিয়াই এশিয়ার প্রথম দেশ যারা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল। ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ হিসেবে ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপে খেলে দেশটি। তবে, খেলাটির জন্য দেশটিতে নিঃসন্দেহে এক জাতীয় আবেগ কাজ করলেও, বহু বছরের দূর্নীতি, সহিংসতা ও অব্যবস্থাপনার ফলে তারা কখনোই আর বিশ্বকাপে ফিরে যেতে পারেনি।
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা, সেভ আওয়ার সকার এর তথ্য থেকে দেখা যায়, বিগত ২৮ বছরে দেশটিতে ৭৮ জন মানুষ খেলা সংশ্লিষ্ট কারণে নিহত হয়েছেন।
অভিযুক্তরা প্রায় ক্ষেত্রেই সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর সাথে সম্পর্কিত, যেই গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ক্লাবগুলোর সাথে সংযুক্ত করে। সবচেয়ে বড় এমন গোষ্ঠীগুলোতে লক্ষ লক্ষ সদস্যও রয়েছে।
সুরাবায়ার সাথে আরেমা’র চরম প্রতিদ্বন্দ্বীতার ফলে, সফরকারী কোন ভক্তকেই এই সপ্তাহান্তে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল না। তবুও, স্থানীয় দলটি ৩-২ গোলে হেরে গেলে সহিংসতা আরম্ভ হয় এবং “আরেমানিয়া” হিসেবে পরিচিত আরেমা দলের ৪২,০০০ ভক্তের কেউ কেউ খেলোয়াড় ও ফুটবল কর্মকর্তাদের দিকে বোতল ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছুঁড়ে মারেন।
সফরকারী ভক্তদের বিষয়ে এমন বিধিনিষেধ অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে।
২০১৮ সালে স্থানীয় গণমাধ্যম, তার আগের ছয় বছরের মধ্যে, ইন্দোনেশিয়ার দুই দলের চরম এই প্রতিদ্বন্দ্বীতার সাথে সংশ্লিষ্ট সপ্তম মৃত্যুর খবর জানায়।
ফুটবল ভক্তরা অতীতে এবং গত সপ্তাহান্তেও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোরতার অভিযোগ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বর্ণনা করে জানিয়েছেন যে, নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের লাঠিপেটা করেছে ও বর্ম দিয়ে আঘাত করেছে এবং শেষমেশ সরাসরি ভিড়ের মধ্যে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
ফুটবলের বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার নিয়মানুযায়ী, স্টেডিয়ামের ভেতরে মাঠের নিরাপত্তা কর্মী বা পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার নিষিদ্ধ।