অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অবৈধ খনন নিয়ে তুরস্ককে সতর্ক করেছে গ্রীস


ফাইল – ১২ অগাস্ট, ২০২০-এ প্রকাশিত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তুর্কি ভূমিকম্প গবেষণা জাহাজ 'ওরুক রেইস' ভূমধ্যসাগরে আন্টালিয়ার পশ্চিমে যাচ্ছে। (ছবি:তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়/এএফপি)
ফাইল – ১২ অগাস্ট, ২০২০-এ প্রকাশিত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তুর্কি ভূমিকম্প গবেষণা জাহাজ 'ওরুক রেইস' ভূমধ্যসাগরে আন্টালিয়ার পশ্চিমে যাচ্ছে। (ছবি:তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়/এএফপি)

গ্রীস সতর্ক করে দিয়েছে যে তারা তাদের ঐতিহাসিক শত্রু তুরস্কের বৈরী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের সমস্ত কূটনৈতিক এবং সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে প্রস্তুত। লিবিয়ার বিভক্ত সরকারের একটি অংশের সাথে সম্প্রতি তুরস্কের বিতর্কিত জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর সরাসরি ওই সতর্কবার্তাটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দুই নেটো মিত্র রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায়, তা এমন একটি সংকটের আশঙ্কা তৈরি করছে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে সামরিক জোটকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

গ্রীসের সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস তুরস্ককে যুক্তির রাজ্যে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। অন্যথায়, তিনি আঙ্কারার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন এবং গ্রীস যে অঞ্চলগুলিকে নিজের বলে মনে করে সেগুলির নিয়ন্ত্রণ দাবি করার তুরস্ক যে পরিকল্পনা করছে তা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে সতর্ক করে দেন।

গ্রীসের নেতা বলেন, ভূগোল পরিবর্তন বা বিকৃত করার সিদ্ধান্ত কারো নির্দেশে পরিবর্তন হয় না। তিনি বলেন, গ্রীসের সীমানা তার নিজস্ব এবং, তারা তাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের শক্তিশালী কূটনৈতিক মিত্রদের দ্বারা এই সীমানা রক্ষা করতে প্রস্তুত।

মিৎসোটাকিস দ্রুত গ্রীসে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এবং সফররত একটি প্রতিনিধি পরিষদের প্রতিনিধি দলের সাথে দেখা করতে যাওয়ার আগে আইন প্রণেতারা তাঁর প্রতি তুমুল করতালি দিয়ে এবং দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতি সম্মান জানান।

গ্রীস এবং তুরস্ক দীর্ঘদিনের শত্রু কিন্তু উভয়ই নেটো মিত্র। প্রায়শই বায়ু এবং সমুদ্র অধিকার নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক কয়েক দশক ধরে পর্যায়ক্রমে শীতল এবং উষ্ণ হয়েছে।

তুরস্ক সম্প্রতি লিবিয়ার দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনের একটির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করার পরে গ্রীসের এই হুমকি এলো।

এজিয়ান সাগরে তুরস্কের সীমান্তের নিকটবর্তী দুটি দ্বীপ লেসবোস এবং সামোসে গ্রীস সৈন্য মোতায়েন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনাকে উত্সাহিত করার সাথে সাথে এই চুক্তিটি সম্পাদিত হয়।

আঙ্কারা লেসবোস এবং সামোস দ্বীপপুঞ্জে সামরিক স্থাপনাকে দুই দেশের সীমানা চিহ্নিত করে কয়েক দশকের পুরনো চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।

তুরস্কের রাষ্ট্রপতি, রিজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, গত কয়েক দিনে আরও এগিয়ে গেছেন। তিনি এজিয়ানের বেশ কয়েকটি দ্বীপের গ্রীক মালিকানার নিন্দা করেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার অবস্থানের জন্য তুরস্ককে তিরস্কার করেছে এবং ওয়াশিংটন ইতোমধ্যেই রাশিয়ার কাছ থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য তুরস্কের সাথে মতভেদ করছে। নেটো দেশগুলো বলেছে, এই পদক্ষেপটি জোটকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

বিশ্লেষক জর্জ জোগোপোলোস ব্যাখ্যা করেছেন, এই ক্রমবর্ধমান সঙ্কট নেটো জোটের জন্য আরও বিস্তৃত প্রতিক্রিয়া বয়ে আনতে পারে এবং জোটের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ রাশিয়া এটিকে কাজে লাগাতে পারে।

তিনি বলেন, "যদি তুরস্কের এই আচরণ অব্যাহত থাকে, তাহলে নেটোর দক্ষিণ-পূর্ব দিকের সংহতি বিপন্ন হবে, মস্কোতে এই সংবাদকে স্বাগত জানানো হবে।"

এথেন্সের কূটনৈতিক সূত্র ভিওএ-কে জানায়, বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে আঙ্কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জলসীমায় ড্রিলিং জাহাজ পাঠানোর আগে তুরস্কের সর্বশেষ জ্বালানি চুক্তি বাতিল করার চেষ্টা করতে এবং তা বানচাল করে দেওয়ার জন্য গ্রীক কর্মকর্তারা আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্য সফর করবেন।

XS
SM
MD
LG