যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার ইরানের ঊর্ধ্বতন সাত নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া ও ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতিবাদ দমনে তাদের ভূমিকার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। হিজাবে ঠিকমত চুল না ঢাকার জন্য দেশটির নৈতিকতা-পুলিশের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর বিরুদ্ধে ঐ প্রতিবাদকারীরা বিক্ষোভ করছেন।
ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি এবং দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী এইসা জারেপোর সহ ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক বিবৃতিতে বলেন, “তথাকথিত নৈতিকতা-পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি’র মর্মান্তিক মৃত্যুর পর বিক্ষোভে, ইরানের সরকারের অব্যাহত সহিংস দমনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানায়। তারপর থেকে ইরানের সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের বিরুদ্ধে চড়াও হয়ে আসছে।”
ট্রেজারির আন্ডারসেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন বলেন, “মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারগুলো ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের সরকারের ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে অব্যাহত সহিংস দমনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানায় এবং যারা এমন কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা দেয় বা সেগুলো সমর্থন করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে [যুক্তরাষ্ট্র] সংকোচ করবে না।”
নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের এই সাতজন ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে থাকা যে কোন সম্পদ জব্দ করবে এবং তাদেরকে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেন করা থেকে বিরত রাখবে। একই সাথে তা আমেরিকানদেরও তাদের সাথে ব্যবসা করতে বাধা দিবে।
ট্রেজারি জানায় যে, ওয়াহিদি ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে (এলইএফ) তত্ত্বাবধান করেন। বিক্ষোভ দমনে এই বাহিনীগুলোকেই ব্যবহার করা হয়। ট্রেজারি জানায়, “সাম্প্রতিক বিক্ষোভে অন্তত ডজন কয়েক হতাহতের জন্য” নিরাপত্তা পুলিশ দায়ী এবং “যে সকল বিক্ষোভকারী শাসকগোষ্ঠীকে চ্যালেঞ্জ করা অব্যাহত রেখেছে তাদের ওয়াহিদি প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছেন এবং চলমান বিক্ষোভ দমনে এলইএফ কর্মকর্তাদের নির্মম কর্মকাণ্ডগুলোকে সমর্থন করেছেন।”
ট্রেজারি বলে, “বিক্ষোভ মন্থর করার আশায় লক্ষ লক্ষ ইরানীর ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার ইরানের সরকারের লজ্জাজনক প্রচেষ্টার জন্য জারেপোর দায়ী।” যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থাটি বলে, জারেপোর “ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যতদিন বিক্ষোভ চলবে ততদিন ইন্টারনেট দমন ও অনলাইনে কন্ঠরোধ করা অব্যাহত থাকবে।”