বাংলাদেশের চট্টগ্রামে, মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে দায়ী করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। সোমবার (১০ অক্টোবর) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিমের আদালতে শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
আদালতে পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রের ওপর নারাজির আবেদন করেন বাবুল। আদালত বাবুলের আবেদন খারিজ করে দেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, “মিতু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পক্ষ থেকে নারাজি ও পুনঃতদন্তের আবেদন করা হলে, শুনানি শেষে তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত এবং অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন।”
মামলায় বাবুল আক্তার ছাড়া অন্য অভিযুক্তরা হলেন; মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু পলাতক।
এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।
অভিযোগপত্রে পিবিআই উল্লেখ করেছে যে, পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার সোর্সদের দিয়ে স্ত্রী মিতুকে খুন করিয়েছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। বাবুল–মিতু দম্পতির বড় ছেলে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে, চট্টগ্রামের নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। এ ঘটনা ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই।
পরে, গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আট জনকে অভিযুক্ত করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। এরপর, আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও জবানবন্দি দেননি বাবুল।
অন্যদিকে, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই।