রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টাকে সফল করতে যুক্তরাজ্যকে (ইউকে) আরও শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকালে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জেমস ক্লিভারলির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এ অনুরোধ জানান।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এসময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য জেমস ক্লিভারলিকে ধন্যবাদ জানান।
জেমস ক্লিভারলি গত ৬ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ক্লিভারলি, রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ফোনালাপে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের উন্নয়ন, বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের চলমান সংঘাত এবং এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আলাপকালে, ড. মোমেন বলেছেন যে, সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের মানুষ সংঘাতের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তা আরও জোরদার করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ
বাংলাদেশ এখন কক্সবাজার এবং ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার আতিথ্য করছে এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আসার পর থেকে গত পাঁচ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবাসন করা হয়নি।
এ বিষয়ে মোমেন বলেন, “এটি একটি ‘খুব জটিল সমস্যা’ এবং সেখানে (মিয়ানমারের অভ্যন্তরে) অনেক ধরনের অপারেটর রয়েছে। এখানে আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) এর কোনো উপস্থিতি নেই এবং বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডে এ ধরনের কোনো বিদেশি সত্ত্বাকে প্রচার বা আশ্রয় দেয় না।”
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, “বাংলাদেশ স্থিতিশীলতার ইস্যুতে চীনের কাছে সমর্থন চেয়েছে এবং বিশ্বাস করে যে চীনা পক্ষ মিয়ানমারকে তা জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বিষয়টি মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।”