ক্যামেরুন ও চাদের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লুগন নদীর পানি উপচে পড়ার কারণে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং ৭০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। লুগন নদী দিয়ে দু’দেশের মধ্যকার সীমানা নির্ধারিত। ক্যামেরুনের কর্মকর্তারা বন্যাদুর্গতদের জন্য সহায়তা নিয়ে এসেছেন তবে তারা জনিয়েছেন যে আরও সাহায্যের প্রয়োজন।
চাদের সাথে ক্যামেরুনের সীমান্তের কাছে গুইজি গ্রামের তেত্রিশ বছর বয়সী কৃষক তান্ডেমবে নোহ বলেছেন, তার স্ত্রী ও তিন সন্তান এক সপ্তাহ ধরে ক্ষুধার্ত। প্রবল বন্যায় তাদের পারিবারিক খাবারের দোকানের থেকে বাজরা, ভুট্টা এবং ১৩টি ছাগল ভেসে গেছে।
ক্যামেরুনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিআরটিভির নেয়া এক সাক্ষাৎকার নোয়াহ বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে অনেক মানুষ নিরাপদে থাকার আশায় পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে । তিনি বলেন যে তিনি গুইজিতে থাকতে এবং মরতে পছন্দ করেন, যেখানে তার এবং তার পূর্বপুরুষরা জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ক্যামেরুনের সরকার বলছে, নোয়াহ হচ্ছেন ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে একজনযিনি নিকটবর্তী চাদের সীমান্তে লগন নদী এবং মাগা হ্রদের পানির কারণে হুমকির মুখে পড়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দু’টি দেশের নদীর পানিই তীরে উপচে পড়েছে এবং বাড়িঘর, ফসল ও প্রাণীকে ভাসিয়ে দিয়েছে।
বন্যায় অন্তত ১২ জন মারা গেছেন এবং সরকার বলছে যে পানির কারণে কয়েক শত হেক্টর ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্যামেরুনের আঞ্চলিক প্রশাসন মন্ত্রী পল আতাঙ্গা এনজি বলেন, প্রেসিডেন্ট ৪৩ হাজার বন্যাদুর্গতকে খাদ্য ও কম্বল সরবরাহের জন্য একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে তাকে পাঠিয়েছেন।
তবে কিছু বেসামরিক নাগরিক বলেছেন যে তারা চান যে সরকার তাদের বাড়িগুলি পুনর্নির্মাণে সহায়তা করুক। এনজি বন্যাদুর্গতদের দুর্দশার কথা বিয়াকে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ওদিকে, চাদের সরকারি প্রচার মাধ্যম টেলি টিচাদ (টাচ) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই সপ্তাহে চাদের রাজধানী এন'ডিজামেনায় লুগন নদীর পানি কারণের ৬০ হাজারেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এতে বলা হয়, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং তাদের খাদ্য ও মানবিক সরবরাহের অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে।
গত মাসে, চাদ বলেছিল যে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঐ অঞ্চলে সবচেয়ে ভারী মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে এন'ডিজামেনার কিছু অংশ কেবল নৌকায় চলাচলের যোগ্য হয়ে পড়েছে এবং হাজার হাজার লোককে তাদের বন্যাকবলিত বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।
ক্যামেরুন এবং চাদ উভয় দেশই অস্বাভাবিক ভারী বর্ষণ এবং বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করে।