কয়েক দশকে চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার আধিপত্য আরও বৃদ্ধি করেছেন। প্রথার ব্যত্যয় ঘটিয়ে রবিবার তাকে আরেক মেয়াদে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নির্ধারণ করা হয়। অন্যান্য নেতৃত্ব নির্ধারণে শি-র এমন মিত্রদের প্রাধান্য দেওয়া হয়, যারা সমাজ ও প্রতিকূল অবস্থায় থাকা অর্থনীতিতে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের তার দর্শনকে সমর্থন করেন।
শি ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসেন। তিনি তৃতীয় মেয়াদে আরও পাঁচ বছরের জন্য সাধারণ সম্পাদকের পদ পেলেন। এর মাধ্যমে দলটি এমন প্রথা থেকে সরে আসল, যাতে তার পূর্বসূরিরা ১০ বছর পর ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতেন। কেউ কেউ ধারণা করেন ৬৯ বছর বয়সী এই নেতা আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকতে চেষ্টা করবেন।
দলটি সাত সদস্য বিশিষ্ট এক স্থায়ী কমিটি নির্ধারণ করে, যা হল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। কমিটিতে শি-র মিত্রদেরই আধিপত্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। এর আগে, শনিবার, প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং-কে নেতৃস্থানীয় পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। লি বাজারব্যবস্থা-সুলভ সংস্কার ও ব্যক্তিগত ব্যবসার পক্ষের প্রবক্তা। দলটির অবসর গ্রহণের জন্য ৬৮ বছরের অনানুষ্ঠানিক বয়সসীমাটি থেকে লি এর বয়স এক বছর কম হওয়া সত্ত্বেও, তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হল।
এর পরিবর্তে শি, লি কিয়াং-কে দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সদস্য ও ঝাও লেজি-কে পদোন্নতি দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ সদস্য হিসেবে ঘোষণা দেন। লি কিয়াং সাংহাই দলের সাবেক সম্পাদক এবং নামের মিল সত্ত্বেও লি কেকিয়াং-এর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। অপরদিকে, ঝাও লেজি পূর্ববর্তী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯০-এর পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সদস্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ সদস্য আইনসভার নেতৃত্ব দেন। আগামী বছর আইনসভার অধিবেশন বসলে ঐ পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
নেতৃত্বের এমন বিন্যাসকে কেউ কেউ “ম্যাক্সিমাম (সর্বাধিক) শি” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যাতে সক্ষমতার চেয়ে আনুগত্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন স্থায়ী কমিটির কিছু কিছু সদস্যের জাতীয় পর্যায়ের সরকারে কোন অভিজ্ঞতা নেই। সাধারণত এমন পদের জন্য এই ধরণের অভিজ্ঞতাকে পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
লি কিয়াং-এর পদোন্নতিটি বিশেষভাবে অস্বাভাবিক কারণ, সেটি তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে, যদিও তার কেবিনেট মন্ত্রী বা উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের কোন অভিজ্ঞতা নেই। তবে, তাকে শি-র ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০০ দশকের শুরুর দিকে, তাদের রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তারা দুইজনই ঝেজিয়াং প্রদেশে একসাথে কাজ করেছেন।