জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, ইউএনএইচসিআর, মিয়ানমার থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের জোরপূর্বক তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো বন্ধ করার জন্য মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন যে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, মালয়েশিয়া থেকে জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন এপ্রিল মাস থেকে চলছে। গত দুই মাসে, ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন মিয়ানমারের শত শত নাগরিককে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র শাবিয়া মান্টু বলেছেন, সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার, যখন মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ এজেন্সির প্রচেষ্টাকে অস্বীকার করে এবং আটকে রাখা এক আশ্রয়প্রার্থীকে মালায়েশিয়া থেকে বের দেয়।
মান্টু বলেছেন যে আন্তর্জাতিক সুরক্ষা চাওয়া লোকদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো তাদের ক্ষতি এবং বিপদের মুখোমুখি করছে।
মান্টু বলেন, "অপ্রত্যাবর্তনের নীতিটি আন্তর্জাতিক আইনের একটি ভিত্তিপ্রস্তর এবং এটি সমস্ত রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক৷ মিয়ানমারের পরিস্থিতি দেশের মধ্যে এবং সীমান্তের ওপারে নিরাপত্তা খোঁজার জন্য লোকেদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে। এই বিতাড়িতদের আসার পরে তাদের কী হবে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে আসলে তথ্য নেই। আর সে কারণেই আমরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে না পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে আসছি।”
ইউএনএইচসিআর মালয়েশিয়ায় ১,৮৩,০০০ এরও বেশি শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থী নিবন্ধিত করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১,০৬,০০০ রোহিঙ্গা এবং প্রায় ৫২,০০০ জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থী রয়েছে যারা মিয়ানমারে সংঘাত ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে এসেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অন্তত ১৭,৫০০ জনকে সারা দেশে ২১টি অভিবাসন আটক কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫০০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, মালয়েশিয়া এপ্রিল থেকে জোরপূর্বক মিয়ানমারের ২০০০ নাগরিককে ফেরত দিয়েছে, গত দুই মাসে ’এর অর্ধেকেরও বেশি।
মান্টু বলেন, ইউএনএইচসিআর জানে না কেন নির্বাসনের সংখ্যা এখন বেড়ে যাচ্ছে। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে তার সংস্থা এর দ্বারা প্রভাবিত মানুষের জন্য মানবিক পরিণতি সম্পর্কে খুব উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেছেন, “আমরা এই বিষয়ে ক্রমাগত সংলাপ করছি এবং সেখানকার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। এবং এটি একটি অব্যাহত হস্তক্ষেপ যা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমার কাছে এর চেয়ে বেশি তথ্য নেই। তবে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের হস্তক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করি এটি বন্ধ হবে।”
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এই অঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যের কাছে তাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছে যাতে নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে আসা মিয়ানমার নাগরিকদের সুরক্ষা প্রদান অব্যাহত রাখা যায়। মিয়ানমার থেকে আশ্রয়প্রার্থী ও উদ্বাস্তুদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখার অভ্যাস বন্ধ করার জন্য মালয়েশিয়ার সরকারকেও তারা এই আহ্বান জানাচ্ছে।