ডে অফ দ্য ডেড বা ‘মৃতদের দিবস’ এ বেদীগুলো সাজাতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে কাগজ কেটে বানানো সাজসজ্জার জিনিসপত্র। সেগুলোর প্রথাগত উৎপাদন প্রক্রিয়াটিই সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছেন মেক্সিকোর কারিগরেরা।
ক্রমেই জনপ্রিয় হতে থাকা শিল্পোৎপাদনের প্রক্রিয়াগুলোকে তোয়াক্কা করেন না ৪৯ বছর বয়সী ইয়ুরুদিয়া টোরেস আলফারো। তিনি দ্বিতীয় প্রজন্মের কাগজ কাটার কারিগর, যিনি এখনও তার পারিবারিক কারখানাটিতে নিজেই কাগজের নকশাগুলো তৈরি করেন। কারখানাটি মেক্সিকো সিটি’র দক্ষিণ প্রান্ত ঘেঁষে থাকা গ্রামীণ অঞ্চলটির জোকিমিলকো-তে অবস্থিত।
ছোটবেলা থেকেই তিনি যেভাবে করে আসছেন, ঠিক সেভাবেই টোরেস আলফারো তার ধারালো ছেনি দিয়ে টিস্যু পেপারের মোটা দিস্তাগুলোতে কারুকাজ করে চলেছেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম “পাপেল পিকাডো জোকিমিলকো”।
অন্যরা প্লাস্টিকের সিট, লেজার কাটার বা পূর্বপ্রস্তুতকৃত নকশা ব্যবহার করলেও, টোরেস প্রতিটি ধাপই নিজ হাতে করেন, ঠিক যেভাবে মেক্সিকোর কারিগরেরা ২০০ বছর ধরে করে আসছেন।
১৮০০ সালের দিকে এটি আরম্ভ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, টিস্যু পেপার ব্যবহার করে “পাপেল পিকাডো” তৈরিটি, খুব সম্ভবত স্পেনীয়দের আগমনের অনেক আগে থেকে চলে আসা একটি প্রথারই চলমান রূপ। পূর্বে ডুমুর গাছের বাকল থেকে তৈরি কাগজে আনুষ্ঠানিক চিত্রকর্ম অঙ্কিত হত। মেক্সিকোর কারিগররা পরবর্তীতে আমদানিকৃত টিস্যু পেপার ব্যবহার আরম্ভ করেন, কারণ সেগুলো সস্তা ও এতটা পাতলা ছিল যাতে করে, ধারালো যন্ত্র, প্রচণ্ড মনোযোগ ও বিপুল দক্ষতার সমন্বয়ে একসাথে ডজনকয়েক সিট একবারেই কাটা যেত।
তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল নকশাটি: সেটির নকশাই নির্ধারণ করে যে কোন অংশগুলো কাটতে হবে, যার ফলে একটি জটিল, হালকা কাগজের জালের মত নকশা তৈরি হয়। সেটিকে অনেকসময়ে ভবনে বা রাস্তার উপরে আড়াআড়িভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে আরও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সেগুলোকে ডে অফ দ্য ডেড এর বেদীগুলোর উপর ঝোলানো হয়। মেক্সিকোর পরিবারগুলো এই দিবসটি তাদের প্রয়াত আত্মীয়স্বজনকে স্মরণে ও তাদের সাথে ভাববিনিময়ের জন্য উৎসর্গ করেন।
এই উৎসবটি ৩১ অক্টোবর আরম্ভ হয়। এদিনটি যারা দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন তাদের স্মরণ করা হয়। এরপর ১ নভেম্বরে, শৈশবে মারা যাওয়াদের স্মরণ করা হয়, এবং তারপর ২ নভেম্বর, যারা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর মারা গিয়েছেন, তাদের স্মরণ করা হয়।