উত্তর কোরিয়া বুধবার কমপক্ষে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে কমপক্ষে তিনটি দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখন্ডের দিকে। দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে টেলিভিশনে নজীরবিহীন এই নিক্ষেপের কারণে সতর্কতা জারি করা হয় এবং উপকূলের একটি দ্বীপ প্রদেশে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় পর্যটন শহর সোকচো থেকে মাত্র ৫৭ কিলোমিটার পূর্বে জলসীমায় পড়ে। আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে একটি জনবহুল দ্বীপ অঞ্চল উলুং কাউন্টি থেকে ১৬৭ কিলোমিটার দূরে অবতরণ করে। তৃতীয়টি ডি ফ্যাক্টো আন্তঃকোরীয় সমুদ্র সীমান্ত থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে আন্তর্জাতিক জলসীমায় পড়ে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল শিন চুল কাং বলেন, " উৎক্ষেপণটি খুব অস্বাভাবিক এবং অগ্রহণযোগ্য কারণ এটি কোরিয়ান উপদ্বীপের বিভাজনের পর প্রথমবারের মতো এনএলএল-এ আমাদের আঞ্চলিক জলের কাছাকাছি পড়েছে। "
উত্তর কোরিয়া এ বছর রেকর্ড পরিমান, প্রায় ৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলেও আজ পর্যন্ত কোনোটিই দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখন্ডের দিকে উৎক্ষেপণ করা হয়নি যা বিমান হামলার মত সতর্কতা জারি করতে হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে শত্রুকে নির্ভুলভাবে আঘাত করার ক্ষমতা এবং প্রস্তুতি" এই প্রতিক্রিয়াটিতে প্রদর্শন করা হয়েছে।
এই ঘটনাগুলি কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সেখানে উভয় পক্ষই সামরিক শক্তি প্রদর্শন বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া আরেকটি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল উত্তর কোরিয়াকে তার সর্বশেষ উষ্কানির জন্য "স্পষ্ট মূল্য প্রদান নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের" নির্দেশ দিয়েছেন।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা এই উৎক্ষেপণকে 'একেবারেই অগ্রহণযোগ্য' বলে অভিহিত করেছেন। টোকিওর
কর্মকর্তারা বলছেন, বেইজিংয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তারা উত্তর কোরিয়ার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয় পক্ষই উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছে।
এনকে নিউজ ওয়েবসাইটের সিউল-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠাতা চাদ ও'ক্যারলের মতে, উত্তর কোরিয়ার কৌশলটি তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে করা বলে মনে হচ্ছে।
একদিন আগে মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়া টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, ওয়াশিংটন ও সিউলের সামরিক মহড়া বন্ধ করা উচিত।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন , যৌথ সামরিক মহড়াগুলি প্রতিরক্ষামূলক প্রকৃতির ছিল।
(লি জুহুন এই প্রতিবেদনে কাজ করেছেন)