চট্টগ্রামে মারধরের পর কুকুর লেলিয়ে ছাদ থেকে ফেলে মেধাবী ছাত্র হিমাদ্রী মজুমদারকে হত্যায় বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশের মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। বাকি দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) অভিযুক্তদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড শুনানি করে বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। অভিযুক্তদের মধ্যে জুনায়েদ ও জাহিদুল পলাতক ছিল।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা হলেন-মাহাবুব আলী ড্যানি, জাহিদুল ইসলাম শাওন ও জুনায়েদ রিয়াদ।
খালাস দেওয়া হয়েছে-শাহ সেলিম ওরফে টিপু ও শাহাদাত হোসেন সাজুকে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমেদ হিরো। অভিযুক্ত পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমেদ হিরো।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকার সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল হিমাদ্রীকে ধরে নিয়ে যান অভিযুক্ত শাওন, রিয়াদ, সাজু ও ড্যানি। হিমাদ্রী ওই স্কুল থেকে ‘এ’ লেভেল পাস করেন। অভিযুক্তরা তাকে ধরে পাঁচলাইশ এলাকায় রিয়াদের বাবা ব্যবসায়ী টিপুর বাড়ির ছাদে নিয়ে যান। সেখানে আটকে রেখে মারধরের পর হিংস্র কুকুর লেলিয়ে ও ধাক্কা দিয়ে তাকে ফেলে দেওয়া হয় ছাদ থেকে। হাসপাতালে ২৬ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর একই বছরের ২৩ মে মৃত্যু হয় হিমাদ্রীর।
এ ঘটনায় তার মামা শ্রী প্রকাশ দাশ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
বিচার শেষে ২০১৬ সালের ১৪ অগাস্ট পাঁচ অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম।
পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি অভিযুক্তরা আপিল ও জেল আপিল করেন।
বুধবার মৃত্যুদণ্ড, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।