অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইভিএমে কারচুপি অসম্ভব, কেউ চাইলে পরীক্ষা করতে পারে: নির্বাচন কমিশনার আলমগীর


ইভিএম
ইভিএম

বাংলাদেশের অন্যতম নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, “এককালীন ব্যবহারের জন্য চিপ তৈরি হওয়ায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কারচুপি সম্ভব নয়। কেউ চাইলে যেকোনো ইভিএম পরীক্ষা করতে পারে।” মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, “ইভিএমে কিছুই নতুন করে লেখার সুযোগ নেই। এছাড়া, প্রোগ্রামিং পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। অনেকে মনে করেন এটা নির্বাচন কারচুপির মেশিন, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা।”

কমিশনার আলমগীর আরো বলেন, “বিগত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত দল দ্বারা ইভিএম পরীক্ষা করতে বলেছে।”

নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রথমেই বলতে হবে, প্রোগ্রামিং করে ফলাফল উল্টে দেয়া যায় কি-না। এ ধরনের বক্তব্য তাত্ত্বিকভাবে সঠিক মনে হলেও, কার্যত ভুল হতে পারে।”

তিনি বলেন, “আপনি বলতে পারেন যে একটি কোম্পানির ওষুধ ভেজাল হতে পারে; কিন্তু অন্য সব কোম্পানির ওষুধ ভেজাল নয়। মোদ্দা কথা হলো, আমাদের ইভিএম আলাদা। অনেকেই বলছেন এটা ভারতে ব্যবহৃত ইভিএমের মতো। এটাকে ভারতের সাথে তুলনা করা যায় না। ভারতে ইভিএম ব্যবহারকালে ভোটার শনাক্তকরণ ম্যানুয়ালি করা হয়; বাংলাদেশে এটি ইলেকট্রিক ভাবে করা হয়।”

কমিশনার আলমগীর বলেন, “যেহেতু বাংলাদেশের ছবি এবং আঙুলের ছাপ-সহ ভোটার ডাটাবেস রয়েছে, তাই বাংলাদেশের ইভিএম প্রকৃত ভোটার শনাক্ত করতে পারে। ভারতের তা করার সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে ইভিএমের জন্য যে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে তা কেবল যোগ করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন যে ভোটাররা কেবল ভোট দিতে পারবেন। এর প্রোগ্রামিং সেভাবে করা হয়েছে, এটা অন্য কিছু করতে পারে না, তিনি বলেন।

নির্বাচন কমিশনার উল্লেখ করেন, “এখানে এমন কোন সুযোগ নেই যে কেউ ডিভাইসটি ম্যানিপুলেট করতে পারে। এমনকি বাইরে থেকেও নয়। সুতরাং, একবার লেখা হয়ে গেলে পুনরায় লেখা বা সম্পাদনা করার সুযোগ নেই, কারণ এটি একবারের জন্য ব্যবহারযোগ্য। আর, বাংলাদেশে ইভিএম-এর সঙ্গে ইন্টারনেট-এর কোনও সংযোগ নেই।”

“ব্যালট ইউনিটের সঙ্গে প্রদত্ত সংযোগটি কাস্টমাইজ যোগ্য। এর মধ্যে কিছুই ঢোকানো যাবে না। শুধুমাত্র এই ইভিএমের জন্য যে ডিভাইসটি তৈরি করা হয়েছে তা ছাড়া আপনি অন্য কোনো ডিভাইস যোগ করতে পারবেন না। বাংলাদেশে ব্যবহৃত ইভিএম শুধুমাত্র ক্যালকুলেটরের মতো যোগ-বিয়োগ করে। ক্যালকুলেটর-এর প্রোগ্রাম পরিবর্তন করার বিকল্প নেই, এই মেশিন গুলো একই করম; জানান নির্বাচন কমিশনার আলমগীর।

তিনি বলেন, “যারা ইভিএম নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তারা এটা জানে না বা বোঝে না। তারা চাইলে যেকোনো ইভিএম পরীক্ষা করতে পারে।”

ইসি কমিশনার আরও বলেন, “ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুবিধা হলো, নির্বাচনের আগে বা পরে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। ভোটার ছাড়া ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ভোটার কেন্দ্রে না আসলে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হলে মাত্র ১০ শতাংশ ভোট দেওয়া যাবে। অন্যদিকে, ব্যালটে ১০ শতাংশ ভোটারের পক্ষে ১০০ শতাংশ ভোট দেওয়া সম্ভব। ইভিএমের মাধ্যমে জালিয়াতির কোনও সুযোগ নেই।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ভোটকেন্দ্রে কারচুপিতে সহায়তাকারী প্রার্থী ও এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে না বলে এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রের বাইরে রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

XS
SM
MD
LG