জাতিসংঘের তদন্তকারীদের একটি দল দেখতে পেয়েছে যে ইউক্রেনীয় এবং রুশ উভয় যুদ্ধবন্দী তাদের যারা আটক করেছে তাদের দ্বারা নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত কয়েক মাস ধরে ১৫৯ জন যুদ্ধবন্দীর সাথে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে রাশিয়ান ফেডারেশনের হাতে বন্দি ২০ জন নারী এবং ইউক্রেনের হাতে ১৭৫ জন পুরুষ যুদ্ধবন্দী রয়েছে৷
তদন্তকারীরা রিপোর্ট করেছেন যে শুধুমাত্র ইউক্রেন তাদের রুশ যুদ্ধবন্দীদের সাথে দেখা করতে গোপন বন্দিস্থলে প্রবেশাধিকার দিয়েছে। তদন্তকারীরা বলেছে যে রাশিয়া তাদের অনুরূপ প্রবেশাধিকার দেয়নি, তাই তারা তাদের মুক্তির পরে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের সাক্ষাত্কার নিয়েছে।
ইউক্রেনে জাতিসংঘের মানবাধিকার মনিটরিং মিশনের প্রধান মাতিলদা বোগনার কিয়েভ থেকে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দীরা তার দলকে বলেছে যে তাদের ধরার সাথে সাথেই তাদের মারধর করা হয়েছে। কারো কারো ব্যক্তিগত জিনিসপত্র লুট হয়েছে।
বোগনার উল্লেখ করেন যখন তারা রাশিয়ার কিছু বন্দী কেন্দ্রে যান, তখন সেখানে যুদ্ধবন্দিরা বলেছিল যে তারা দীর্ঘ সময় ধরে মারধর, হুমকি, কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছিল, তাদের বিবস্ত্র করা হয়েছিল এবং চাপের মুখে রাখা হয়েছিল।
বগনার বলেন, মিশন তথ্য পেয়েছে যে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে এই তথাকথিত ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন নয়জন যুদ্ধবন্দি মারা গেছে। তিনি বলেন তার দল এখন এই রিপোর্ট করা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
তিনি বলেন "আমরা যাদের সাক্ষাতকার নিয়েছিলাম তাদের বেশিরভাগই আমাদের বলেছিল যে তাদের আটকের সময় তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল এবং খারাপ আচরণ করা হয়েছিল। অত্যাচার এবং দুর্ব্যবহার শুধুমাত্র যুদ্ধবন্দীদের সামরিক তথ্য বা কথিত অপরাধ সম্পর্কে তথ্য দিতে বাধ্য করার জন্য ব্যবহার করা হয়নি। সাক্ষাত্দানকারীরা আমাদের বলেছিল, তাদের ভয় দেখানো এবং অপমান করার জন্য প্রতিদিন তাদের প্রতি অত্যাচার এবং দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল।"
বগনার বলেন, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা অত্যাচার ও দুর্ব্যবহারের শিকার রাশিয়ার যুদ্ধবন্দিদের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে জাতিসংঘের মিশন। বগনারের মতে, কিছু পুরুষ বলেছিল যে আত্মসমর্পণের পরে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে তাদের ঘুষি ও লাথি মারা হয়েছিল। অন্যরা বলেছে যে ইউক্রেনের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা বা তাদের পাহারা দেওয়া সামরিক কর্মীরা তাদের ছুরিকাঘাত করেছে বা বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে।