কাতারে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে আসতে থাকা ভক্তদের কাছে সাংস্কৃতিক প্রত্যাশা ব্যাখ্যা করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে। এই প্রচারপত্র দেখে মনে হবে যে এগুলো কোন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিলি করা হচ্ছে। সেগুলোর কয়েকটিতে নারীদের পোশাকের নিয়মকানুন উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোতে বলা হয়েছে যে নারীদের কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে।
সমস্যা হল যে এগুলো আসলে ভুয়া।
স্থানীয় আয়োজক কমিটি সুপারিশ করেছে যে ভক্তরা যেন “সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তবে, পোশাকের কারণে কাউকেই কাতারে গ্রেপ্তার বা কোন খেলা দেখা থেকে বিরত হবে না। কিন্তু, ফুটবলের বৃহত্তম এই প্রতিযোগিতা ঘিরে যথাযথ পোশাক ও শালীনতার বিষয়ে ক্রমাগতভাবে গুজব ছড়াতে থাকায়, তা দেশটির সমতার রেকর্ডের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
রথনা বেগম, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর একজন জ্যেষ্ঠ্য গবেষক। তিনি রক্ষণশীল দেশ কাতারের পুরুষ অভিভাবকত্ব ও নারী অধিকার নিয়ে গবেষণা করেছেন।
রথনা বেগম ২০২১ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন্য একটি প্রতিবেদনে কাতার ও নারীদের প্রতি দেশটির আচরণ নিয়ে লিখেছিলেন। ঐ প্রতিবেদনে তিনি বলেন যে, কাতারে নারীরা অগ্রগতি করলেও এখনও জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সেখানকার নারীদের বিয়ের জন্য, উচ্চ শিক্ষার জন্য এবং নির্দিষ্ট কিছু চাকরির জন্য অবশ্যই পুরুষ অভিভাবকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। অভিভাবকরা ২৫ বছরের কম বয়সী নারীদের বিদেশে সফর করা থেকেও বিরত রাখতে পারেন।
বেগম বলেন, “সেখানে কোন স্বাধীন নারী অধিকার সংগঠন নেই এবং না থাকার কারণগুলোর একটি হল, দেশটির কর্তৃপক্ষের এমন আইন রয়েছে যা কি-না আপনার জন্য এমন কোন সংগঠন তৈরি করা দুষ্কর করে রেখেছে, যেগুলোকে কোনভাবে রাজনৈতিক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আপনার জন্য তেমন কোন সংগঠন করার অনুমতি নেই। নারীদের জন্য অফলাইনে এমনকি অনলাইনেও তাদের অধিকারের দাবি জানানো বা তা প্রকাশ করা একটি কষ্টসাধ্য বিষয়।”
অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটি একটি কারণ, যার ফলে সমালোচকরা ২০২২ বিশ্বকাপ কাতারে আয়োজনের বিষয়ে ফিফার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পর্যবেক্ষকরা নিশ্চয়ই একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন, এ বছরের শুরুর দিকে, বিশ্বকাপের ড্র-এর সময় আমেরিকার অবসরপ্রাপ্ত ফুটবল তারকা কারলি লয়েড একটি উঁচু গলার লম্বা হাতাওয়ালা দীর্ঘ পোশাক পরেছিলেন।