পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির রজত জয়ন্তী উপলক্ষে এক সাক্ষাৎকারে উশৈ সিং বলেন, “কেউ কেউ বা অনেকে বলেন যে শান্তিচুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। আমি মনে করি, পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি এটি সত্যি। আবার শান্তিচুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়িত হয়েছ এটাও সত্যি। বাকি ধারাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য শক্তিশালী জাতীয় কমিটি আছে। যেটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করছেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। এই কমিটিকে সহযোগিতা করে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই কমিটি মূলত দেখছে কোথায় ধীরগতি, কোথায় বাধা রয়েছে। এসব সমাধান করে এগিয়ে যাচ্ছে কমিটি। যতটুকু বাকি আছে, আমরা সবাই আন্তরিক হলে সমাধান করতে পারব।”
বীর বাহাদুর উশৈ সিং বলেন, “অশান্ত পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট থেকেই ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি হয়। যারা আন্দোলন করছিলেন, তাদের যত সমস্যা সেগুলো শোনার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের সমস্যাকে রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ কারণে, একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কয়েকটি বৈঠক হয়েছে জাতীয় কমিটির। এই দীর্ঘ সমস্যার সমাধানে আমরা একটি জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।”
উশৈ সিং বলেন, “১৯৯৭ সালের সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তার আন্তরিকতা, মমত্ববোধের কারণেই পার্বত্য এলাকা বর্তমান অবস্থায় এসেছে।” শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “এতে দুই বছর লাগতে পারে, আবার এক বছরও লাগতে পারে। আমরা চাচ্ছি কম সময়ের মধ্যে পরিপূর্ণ শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে। এটিই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। আমরা সে চেষ্টা করছি।”
শান্তি চুক্তির পূর্ণ কোন বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হয়নি, জানতে চাইলে উশৈ সিং বলেন, “বিশেষ করে, ভূমির বিষয়টি বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া, টুকিটাকি কিছু বিষয় আছে। তবে ভূমিই প্রধান। এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, আমাদের আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধিসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বসেছিল। আমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি। আর কিছুটা বাকি আছে, আলোচনা করলে হয়তো এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে পারব, এই সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি।”
সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থানীয় কিছু সমস্যা হচ্ছে, এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা কোনো অশান্তি চাই না। তবে, কিছু ঘটনা ঘটছে, কিছু গ্রুপ আছে, চাঁদাবাজি আছে; এ সব কারণে জানমালের যাতে ক্ষতি না হয়, এ বিষয়ে আমরা খুবই সজাগ আছি। কোনো একটা ঘটনা ঘটলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
উশৈ সিং আরও বলেন, “কোনো ধরনের সমস্যা আমরা চাই না। সকল মানুষ শান্তিচুক্তি অনুযায়ী বসবাস করুক, আমরা তাই চাই। সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।”