ইরানে বিক্ষোভকারীরা সোমবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘট শুরু করেছে। সেপ্টেম্বরে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক এক কুর্দি নারীর মৃত্যুর পর সেখানে বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পরে।
সরকারে সংস্কার আনার দাবী আদায়ের জন্য , বিক্ষোভকারীরা বুধবার পর্যন্ত সারা দেশের দোকান মালিকদের তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে , তেহরান, কারাজ, ইসফাহান, মাশহাদ, তাবরিজ ও শিরাজসহ বেশ কয়েকটি শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় দোকানপাট বন্ধ দেখা যায়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়, তেহরানের গ্র্যান্ড বাজারে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দোকান বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোমবার তেহরানের মধ্যাঞ্চলে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান গোলামহোসেইন মোহসেনি-ইজেই, দোকানদারদের ব্যবসা বন্ধ করতে যারা উৎসাহিত করছে তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইরানের নৈতিকতা পুলিশের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ার পর এই ধর্মঘট শুরু হয়। এই পুলিশ নারীদের পোশাকের উপর কঠোর বিধি প্রয়োগ করে।
আধা-সরকারী সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ ইরানের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ জাফর মন্টেজেরিকে উদ্ধৃত করে শনিবারের এক প্রতিবেদনে বলেছে, "নৈতিকতা পুলিশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।"
তবে সক্রিয়বাদীরা এই পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। রবিবার দিনের শেষে দিকে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আল-আলম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলে, মন্টেজারি যে বিচার বিভাগের সদস্য, সেটি নৈতিকতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত নয়।
সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের রিপোর্টে বলা হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ইরানের শহরগুলিতে নৈতিকতা পুলিশ কর্মকর্তাদের কম দেখা গেছে । শহরের রাস্তায় হিজাব না পরেই নারীদের হাঁটতে দেখা সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে।
২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে হিজাব সঠিকভাবে না পরার জন্য নৈতিকতা পুলিশ আটক করার পর ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর ফলে বিক্ষোভের ঢেউ ওঠে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এতে কমপক্ষে ৪৭১ জন নিহত হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স এবং এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে ।