বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক জনসভায় এই ঘোষণা দেন তিনি।
শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে জনগণকে তাঁর আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি’।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাদের দলকে ভোট দেবেন কি না জানতে চাইলে উচ্ছ্বসিত মানুষ হাত তোলেন। তিনি জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগের কক্সবাজার জেলা শাখা আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার পক্ষে রায় দেওয়ায় আওয়ামী লীগ টানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছে’।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রয়েছে যা দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়নের দিকে নিয়ে যায়।… বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে’।
সমাবেশের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং ১ হাজার ৯৬৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্দশা লাঘবে তাঁর সরকারের চালু করা বেশ কয়েকটি উদ্যোগ তুলে ধরে ঘোষণা করেছেন যে যতদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন এ দেশের মানুষের কল্যাণ দেখাশোনা করা তাঁর দায়িত্ব।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা হিসেবে আমি যতদিন ক্ষমতায় আছি ততদিন আপনাদের কল্যাণ দেখভাল করা আমার কর্তব্য’।
জনগণের দুর্দশা সৃষ্টির জন্য তিনি আবারও বিএনপি ও তার মিত্র জামায়াতের নিন্দা করেন।
তিনি বলেন, ‘অগ্নিসংযোগ, হত্যা, খুন, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, দেশের টাকা বিদেশে পাচার, এসবই তারা করতে পারে’।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, খালেদা জিয়া এতিমখানার টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং সে কারণে তিনি দুর্নীতির দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।
আদালতে বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থ পাচারের জন্য পরিচিত তাঁর ছেলে তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা হিসেবে ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে’।
তারেক জিয়া ১০টি ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তিনি কী উদ্দেশ্যে এই অস্ত্রগুলো এনেছিলেন’।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া এবং তাদের সঙ্গীরা আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, যা যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়। এতে আওয়ামী লীগের ২২ জন সদস্য নিহত হন’।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সব সময় লুটেরা, জঙ্গি, দেশের টাকা পাচার করে, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে’।
একজন মানুষ কি অন্য মানুষকে আগুন দিয়ে মেরে ফেলতে পারে? জানতে চান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়ার এই আন্দোলনের লক্ষ্য অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করা। তারা ধ্বংস ছাড়া কিছুই জানে না’।