অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ


কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ
কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির মামলায় বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল হালিম (৪০)। তিনি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কয়া ইউনিয়নের খলিশাদহ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।

জানা যায়, বরখাস্ত হওয়ার পরও অভিযুক্ত ওই শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতেন। এমনকি আইন অমান্য করেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন উপবৃত্তি, মাসিক রিটার্নসহ কার্যালয়ের নানা কার্যক্রম। বৃহস্পতিবারও বিদ্যালয়ে মাসিক রিটার্ন তৈরির কাজে আসেন ওই শিক্ষক। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের মাঠে ভিড় জমাতে থাকেন। লোকজন দেখে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষককে ধরে বিদ্যালয়ের কক্ষে আটক করে পুলিশ ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের খবর দেন।

পরে খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ, শিক্ষা কার্যালয় ও মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, ‘টিসি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিকবার ভুক্তভোগীর শ্লীলতাহানি করেছে। সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট দুপুরে ভুক্তভোগী তার পরিবারের সদস্যদের শ্লীলতাহানির কথা জানায়। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা।

এরপর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গত ২০ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোয় বিভাগীয় উপপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগ অভিযুক্ত শিক্ষককে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

এ সময় বিভাগীয় উপপরিচালক জানান, যতদিন মামলা চলমান থাকবে, ততদিন ওই শিক্ষক বরখাস্ত থাকবেন। বিদ্যালয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।

এ বিষয়ে স্থানীয় একজন বলেন, ‘অভিযুক্ত মাস্টারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বরখাস্ত হয়েও বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতেন। আজ আমরা আটক করে রেখেছি। এর একটা বিচার হওয়া দরকার’।

গরিবুল্লাহ নামের আরেকজন বলেন, 'বহিস্কৃত হয়ে কীভাবে স্কুলে আসেন তিনি। তার (শিক্ষক) জন্য মেয়েরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিছে। এমন শিক্ষকের বিচার হওয়া উচিত’।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, 'অন্য শিক্ষকেরা অফিসের কাজ বুঝতে পারছিলেন না। তাই সহযোগিতা করার জন্য বিদ্যালয়ে এসেছি’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান বলেন, 'স্যারের কোনো দোষ নেই। আমরা বিদ্যালয়ের সব কাজ বুঝি না। তাই স্যারকে ডেকেছিলাম। ভুল হয়েছে। আর এমন হবে না’।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা বলেন, 'প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত রয়েছেন। উপজেলা অফিসে হাজিরা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালেও হাজিরা দিয়েছেন। কাউকে না জানিয়েই তিনি বিদ্যালয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না, কোনো কাজও করতে পারবেন না। বিষয়টি দেখা হচ্ছে’।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, 'খবর পেয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করে থানা আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে’।

XS
SM
MD
LG