অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে র‌্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা


একজন বিক্রেতা ঢাকায় তার রাস্তার পাশের দোকানে বিক্রির জন্য রাখা ক্রিসমাস উপহার পরিষ্কার করছেন। ফাইল ছবি। সোমবার,.২১ ডিসেম্বর ২০০৯। (এপি/পাভেল রহমান)
একজন বিক্রেতা ঢাকায় তার রাস্তার পাশের দোকানে বিক্রির জন্য রাখা ক্রিসমাস উপহার পরিষ্কার করছেন। ফাইল ছবি। সোমবার,.২১ ডিসেম্বর ২০০৯। (এপি/পাভেল রহমান)

বাংলাদেশে বড়দিন উদযাপনের জন্য যেকোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সারা দেশে তার বিশেষ ফোর্স টিম, হেলিকপ্টার, ডগ স্কোয়াড এবং বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রেখেছে।

যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কাল রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) উৎসব ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হবে বড়দিন।

র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বড়দিন উপলক্ষে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যাপ্তসংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং র‌্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া চার্চগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল টহল, যানবাহন স্ক্যানার, চেকপোস্ট ও সিসিটিভি মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, এদিন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশির জন্য রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইতিমধ্যে এলিট ফোর্সের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া অপপ্রচার ও গুজব ঠেকাতে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টিমের সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‍্যাব

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

XS
SM
MD
LG