তালিবান নারী কর্মীদের নিষিদ্ধ করার পর কয়েকটি প্রধান বিদেশি বেসরকারী সংস্থা আফগানিস্তানে তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন, কেয়ার এবং নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, "যদিও আমরা এই ঘোষণার বিষয়ে স্বচ্ছ, তবু পুরুষ ও মহিলা সমানভাবে যেন আফগানিস্তানে আমাদের জীবনরক্ষাকারী কার্যক্রমে সহায়তা চালিয়ে যেতে পারে সেই দাবিতে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করছি।"
তালিবানের শাসকরা শনিবার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোকে “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত” অবিলম্বে তাদের নারী কর্মীদের কাজে আসতে নিষেধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
অর্থনীতি মন্ত্রক এক চিঠিতে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যেসব প্রতিষ্ঠান এই আদেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হবে।নারীদের জনজীবনে প্রবেশাধিকারের ওপর তালিবানের সর্বশেষ দমন-পীড়নের উদাহারণ এই নির্দেশ।
চিঠিতে বলা হয়, কিছু কিছু সংগঠন তালিবান প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের নারী কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ইসলামী হিজাব বা ড্রেস কোড মেনে চলছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন শনিবার বলেন, “নারীরা সারা বিশ্বে মানবিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিধ্বংসী হতে পারে।”
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানে দুজারিক খুবই হতাশার সাথে বলেন, এটা “সারা দেশে কাজ করা অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের কাজকে দুর্বল করে দেবে, বিশেষ করে যারা বিপর্যস্ত নারী ও মেয়েদের সাহায্য করে।“
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়ক রামিজ আলাব্বারভ টুইটারে বলেছেন, এনজিও-র নারী কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা “মানবিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।“
নরওয়ে তালিবানের এই নির্দেশনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানিকেন হুইফেল্ড্ট টুইট করে বলেন, “অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নরওয়ে অংশীদারদের সাথে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং একটি উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করবে।”
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, মূলত রক্ষণশীল আফগান সমাজের নারীরা যাতে মানবিক সহায়তা পেতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য নারী কর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।