বাংলাদেশে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর পরোক্ষ করের বোঝার কারণে, আয় বৈষম্য বাড়ছে; অন্যদিকে ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয় ও সম্পদের তুলনায় কম কর পরিশোধ করছে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার ব্র্যাক ইনে আয়োজিত, বৈষম্য মোকাবেলা এবং রাজস্ব বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ করের ব্যবহার শীর্ষক নীতি-সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সংলাপে বক্তব্য দেন, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, বিসিএস (ট্যাক্স) একাডেমির মহাপরিচালক এম এম ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ, অর্থ বিভাগের (বাজেট) যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ এবং ইআরডি যুগ্ম সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।
র্যাপিড-এর চেয়ারম্যান ড. রাজ্জাক মূল প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করেন যে একটি অন্যায্য কর ব্যবস্থার কারণে উৎপাদন, কৃষি ও অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও সমাজে আয় বৈষম্য বাড়ছে। দেশের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে কর ব্যবস্থার সংস্কার না হলে, এই আয় বৈষম্য আরও বাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, “বিশ্বের অন্য অনেক অর্থনীতি ক্ষুদ্র জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশ তার রাজস্বের মাত্র ৩৫ শতাংশ আয় করে প্রত্যক্ষ কর থেকে। যার ৬৫ শতাংশ পরোক্ষ কর। বাংলাদেশের অর্থনীতির আয়তন বিবেচনা করলে, সরাসরি কর থেকে ৭০ শতাংশ রাজস্ব আয় হবে বলে ধারণা করা যায়।”
“সম্প্রতি এনবিআর মোট রাজস্ব আয়ে, প্রত্যক্ষ করের অংশ ৩৫ থেকে ৭০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। যা একটি স্বাগত জানানোর মতো উদ্যোগ। এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চালিত করবে এবং জনসেবা প্রদানে সরকারের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা জোরদার করবে;” উল্লেখ করেন বক্তারা। তবে, লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এনবিআর অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে জানান তারা।
আবদুল মজিদ বলেন, “এনবিআরকে সরকারি সংস্থা নয়, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই এনবিআরকে সরকারের ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। বরং, এটি রাষ্ট্রের পক্ষে একটি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত।” তিনি, কর ব্যবস্থা ও এনবিআর সংস্কার করে, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।