বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে বিরোধী দল ও জোটের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকাতে গণমিছিল করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
বেলা ১১টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি পল্টন মোড় ও বিজয় নগর সড়কের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এ ছাড়া অন্য বিরোধী দল ও জোটগুলো রাজধানীতে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে।
দুপুর ২টায় মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে নয়াপল্টন এলাকায় ভিড় শুরু করেন তারা। এ সময় এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর আড়াইটার দিকে ১২ দলীয় জোটের ফকিরাপুল পানির ট্যাংক এলাকা, পুরানা পল্টন ক্রসিং থেকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিং থেকে এলডিপি এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে জামায়াতে ইসলামীর মিছিল বের করে।
২০১৮ সালের এই দিনে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্ষিকী উপলক্ষে ৩০ ডিসেম্বরকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করছে বিএনপি এবং অন্য বিরোধী দল ও জোট।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল কর্মসূচির কারণে ৩০ ডিসেম্বর একই কর্মসূচি পুনঃনির্ধারণ করেছ বিএনপি।
এদিকে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিরোধী দল ও জোটের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ অন্য বিভাগীয় শহরে তিন ঘণ্টার বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সাতটি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
এই জোটের নেতা ও ভাসানী আনসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল শুক্রবার তাদের গণমিছিল থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘বানোয়াট, মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, প্রতিম দাসসহ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে ১১ জানুয়ারি তারা সব বিভাগে গণঅবস্থান করবেন’।
ঢাকায় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান বাবুল।
এ ছাড়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। এ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভবিষ্যতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আমরা বলেছি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হোক। নির্বাচনের আগে এবং তার পরে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে। এর বিকল্প নেই’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেছে; আমরা ১৪ দফা নিয়ে এসেছি। ইতিমধ্যে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল একটি আলোচনায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই দফাগুলো আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি হবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা জনগণের কাছে এগুলো উপস্থাপন করব’।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক দিন। এই সরকার রাতের আঁধারে ভোট লুটপাট করে রাষ্ট্রকে বিপর্যস্ত করেছে’।