বাংলাদেশের পুলিশকে সততা ও মানবতার সঙ্গে অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩। এ উপলক্ষে সোমবার (২ জানুয়ারি) দেওয়া এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করি বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। আমি বিশ্বাস করি আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশকে 'জনগণের পুলিশ' হিসেবে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করবেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানে পুলিশ সাফল্য পেয়েছে। তারা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে, মাদক, সাইবার অপরাধ, গুজব, মানি লন্ডারিং এবং মানব পাচার নির্মূল-সহ রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে চলেছে।”
শেখ হাসিনা বলেন যে পুলিশ, প্রশাসন ও অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের পুলিশ সদস্যরা দেশের সীমানার বাইরে গিয়ে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অনেক সম্মান ও মর্যাদা অর্জন করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় পুলিশের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “করোনা সংক্রমণ মোকাববেলায় পুলিশ সদস্যরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের সেবায় অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখেছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কল্যাণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সবকিছু করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরা প্রযুক্তিভিত্তিক পুলিশিং সেবা সম্প্রসারণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
তিনি উল্লেখ করেন যে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৪ বছরে পুলিশ অর্গানোগ্রাম-এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পদ সৃষ্টি করে জনবল নিয়োগ দিয়েছে। এছাড়াও, তার সরকার শিল্প পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অ্যান্টি-টেরোরিজম ও কাউন্টার-টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, পুলিশ স্টেশন, ইনভেস্টিগেশন সেন্টার, পুলিশ ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি পরিষেবা প্রদানের জন্য ৯৯৯ সহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার আইজিপ’র র্যাঙ্ক-ব্যাজ পুনরায় চালু করেছে এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সার্ভিস ডেস্ক চালু করেছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশ সেবা পৌঁছে দিচ্ছি।”
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩'-এর সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।