অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ঘটনায় ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিভিন্ন সময় অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের চবি শাথার ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের এক কর্মীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘৯ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়’।

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সংঘটিত সংঘর্ষ ও মারধরের প্রতিটি ঘটনা ভালোভাবে যাচাই–বাছাই করেই এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপে জড়াবেন না মর্মে অঙ্গীকার দিয়েছেন। অপরাধ বিবেচনায় তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়েছে’।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বছর ১১ অগাস্ট দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হল ওই শাখা ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাতকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

এ ছাড়া, গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর কর্মরত এক সাংবাদিককে শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২ কর্সীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা হলেন—লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের আরশিল আজিম নিলয় ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিক।

একই বছর ৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২ ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন-সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শহিদুল ইসলাম।

এ ছাড়া গত ২ ডিসেম্বর এ এফ রহমান হলে দেশীয় অস্ত্র হাতে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, হল কক্ষ ভাঙচুরসহ মূল্যবান সম্পদ বিনষ্টকরণ ও কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হুমকি প্রদর্শনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৬ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা হলেন- সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের অয়ন কান্তি সরকার, একই শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের লাবিব সাঈদ ফাইয়াজ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের সিফাতুল ইসলাম, একই বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের মো. মোবারক হোসেন ও একই সেশনের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের নাহিদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুই দিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপ দল। এতে দুই পক্ষের ১১ জন আহত হন। আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। এ দুই দিনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন, ফিন্যান্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ। বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।

এ ছাড়া শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সুনাম বিনষ্টের দায়ে আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী মো. জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

XS
SM
MD
LG