বাংলাদেশের এই বছরের সাধারণ নির্বাচনের আগে “সহিংসতা ও দমন” বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষত যখন কিনা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলী, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সংস্থাটির বৈশ্বিক প্রতিবেদনটিতে বলেন, “বর্ধিত আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার জবাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার করছে, কিন্তু দমন বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সেই দাবিগুলো পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে।”
এই বছরের শেষদিকে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে, যদিও এখনও তা ঘোষণা করা হয়নি। এই অবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জোর দিয়ে বলে আসছে যে নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আগামী নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সহ অন্যান্য দাবিতে বিএনপি ১১ জানুয়ারি দেশ জুড়ে বড় শহরগুলিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
বিএনপি নেতা একেএম ওয়াহিদুজ্জামান ভিওএ-কে বলেন, “২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুইটি সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ দুইবার সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনের সময়ে দলটি যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে তারা আবারও ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় নিবে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে দলটিকে অবশ্যই ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।”
এদিকে, বুধবার শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতাদের চরমপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন যে, তারা এত সহজে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না।
এ সময়ে হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিল আর আওয়ামী লীগ পড়ে গেল, এত সহজ নয়।”
গাঙ্গুলী আরও বলেন যে, বাংলাদেশের শেষ দুইটি সাধারণ নির্বাচন “অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না”, এবং সেগুলোতে সহিংসতা, বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমন, ভোটার ও বিরোধী প্রার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এর মত ঘটনা ঘটে।
ভিওএ-কে গাঙ্গুলী বলেন, “ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আবারও তাদের আন্তর্জাতিক বন্ধুদের বলছে যে, তারা গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ, কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা এবং বিরোধী নেতা ও সমর্থকদের গ্রেফতারের ঘটনাগুলো এর বিপরীত কথা বলছে।”
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ ও অধিকার সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারকে আগামী জাতীয় নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।