বাংলাদেশ ও জাপান এখন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গভীরতর কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করার সুযোগ দেখতে পাচ্ছে। এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শিনজো আবের মধ্যকার সম্পর্কটি ২০১৪ সালে একটি বিস্তৃত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিষয়বস্তু ও মাত্রার দিক থেকে সমৃদ্ধ হয়েছে।”
চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।এর আগে তিনি পাঁচবার জাপান সফর করেন। ড. মোমেন বলেন, “১৯৭২সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে জাপানের তাৎক্ষনিক স্বীকৃতি দেয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপানে ঐতিহাসিক সফর করেন এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে আজকের অনুকরণীয় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেন।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ, জেট্রোর চেয়ারম্যান ও সিইও নোবুহিকো সাসাকি, জাপান ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিদেকি হারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “জাপান তার আশ্চর্যজনক অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অনন্য সংস্কৃতি, সুশৃঙ্খল জীবনধারা এবং কাজের নৈতিকতা এবং দীর্ঘ ইতিহাসের কারণে বাংলাদেশে একটি ঘরোয়া নাম হয়েছে। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশের জন্য জাপানি জনগণ যে ধরনের সখ্য এবং সহানুভূতি অনুভব করে। জাপানি স্কুলের শিশুরা তাদের টিফিনের টাকা ১৯৭০ সালের বন্যা দুর্গতদের জন্য এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য দান করেছিল।”
“বাংলাদেশ সবসময় সেই অনুভূতির প্রতিদান দিয়েছে। জাপানের জনগণ যখন ভূমিকম্প, ভূমিধস, টাইফুন বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়, তখন আমরা সংহতি প্রকাশ করি এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করি;” উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।
ড. মোমেন জাপান ফাউন্ডেশনকে, বাংলাদেশের জন্য আরো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি প্রণয়ন করতে, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির অন্বেষণ এবং এমনকি জাপানি ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি এবং জাপানের দীর্ঘ ও বর্ণময় ঐতিহ্যের অন্যান্য লুকানো সম্পদকে আরও বড় আকারে নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশে তাদের অফিস খোলার কথা বিবেচনা করতে আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও বর্ণিল ঐতিহ্যকে জাপানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সংস্থাকে উৎসাহিত করেন।
মোমেন বলেন, “আমাদের বিদ্যমান সম্পর্কগুলোকে উন্নত করার লক্ষ্যে এগুলো খুবই প্রয়োজন। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে, জনগণের পর্যায়ে আরও বেশি বিনিময়, অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ এবং সৃজনশীল কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে হবে।”