তালিবানের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত শত শত আফগান নারী কাজে ফিরতে শুরু করেছেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি নামের অন্তত তিনটি এনজিও আফগানিস্তানে আফগান নারীদের নিয়ে মানবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাটি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, "জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় আশ্বাস পেলে কেয়ার আফগানিস্তানে তাদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রম পুনরায় শুরু করবে। যাতে আমাদের মহিলা কর্মীরা সম্প্রদায়-ভিত্তিক বা সহায়ক ভূমিকা উভয়ক্ষেত্রেই নিরাপদে এবং নির্বিঘ্নে তাদের কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম হবে।“
সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, "আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্পষ্ট, নির্ভরযোগ্য আশ্বাস পেয়েছি যে আমাদের মহিলা কর্মীরা নিরাপদে থাকবেন এবং কোনও বাধা ছাড়াই কাজ করতে পারবেন।“
গত ২৪ ডিসেম্বর তালিবানের আদেশে আফগান নারীদের এনজিওর কাজ থেকে বিরত রাখার আদেশের পর এনজিওগুলো তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে।
তালিবান তাদের অত্যন্ত বিতর্কিত এই আদেশের কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি। তাদের এই সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে নারী অধিকার লঙ্ঘন হিসাবে নিন্দিত হয়। গত ১৩ জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তালিবানকে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নারীদের কাজে ফেরার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানায়।
এই ইসলামপন্থী সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, তালিবানের নারীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করা হতে পারে। যা কিনা আফগানিস্তানকে আরও গভীর মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
এনজিওগুলো বলছে, আফগানিস্তানে নারীদের কর্মস্থলে প্রত্যাবর্তন স্বাস্থ্য খাত এবং কিছু শিক্ষাকার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
স্যানিটেশন, খাদ্য বিতরণ এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মতো অন্যান্য ত্রাণ কার্যক্রমে মহিলাদের কাজের উপর তালিবানের নিষেধাজ্ঞা সক্রিয় রয়েছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা মোহাম্মদ কাবুলে তালিবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নারীদের কাজের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে কথা বলেন।
এর আগে তালিবান কর্মকর্তারা বলেছিলেন, নারীদের কাজ ও শিক্ষার ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক।