অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ন্যায়বিচার না থাকলে রাষ্ট্র বিশ্ব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। ২১ জানুয়ারি, ২০২৩।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। ২১ জানুয়ারি, ২০২৩।

বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন যে ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা, রাষ্ট্র বিশ্ব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং উন্নয়ন বিঘ্নিত হয়। শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষ স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন। আইনমন্ত্রী বলেন, “বস্তুত ন্যায়বিচার খাদ্য ও বস্ত্রের মতোই জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। কেননা, খাদ্য ছাড়া যেমন জীবন বেঁচে থাকতে পারেনা, বস্ত্র ছাড়া যেমন মানুষ জনসম্মুখে বের হতে পারে না, তেমনি ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা।”

আনিসুল হক আরও বলেন, “ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, সামাজিক অস্থিরতা বা অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। আর সমাজ নিয়েই রাষ্ট্র, তাই অস্থিতিশীল সমাজ মানেই অস্থিতিশীল রাষ্ট্র। এরূপ রাষ্ট্রের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রসমূহ বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক স্থাপন করতে অনীহা দেখায়, তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়। এছাড়া, পরিণতিতে ঐ রাষ্ট্র বিশ্ব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং উন্নয়ন বিঘ্নিত হয়।”

আইনমন্ত্রী বলেন, “কোনো দেশে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে অপরাধ কর্মে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক এবং এসব বিচার যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে হওয়া উচিত।”

আইনমন্ত্রী বলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিচারকদের সৃজনশীল পদক্ষেপ, বিচারিক কর্মঘণ্টার সঠিক প্রয়োগ, কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, দক্ষ আদালত ব্যবস্থাপনা এবং বিচারকদের সুদক্ষ নেতৃত্বের কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ মামলার বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। তিনি বলেন, “বিচার প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব ক্ষেত্রে সকল বিচারক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।

আইনমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে একটি মামলার অনেকগুলো পক্ষ তৈরি হয়ে যায়। কোনো পক্ষ চায়, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। কোনো পক্ষ চায়, মামলা নিষ্পত্তির সময় প্রলম্বিত হোক। কেউ কেউ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে কালক্ষেপন করে থাকেন। এসব বিষয়কে মাথায় নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, “দ্রুত গতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। স্মরণে রাখতে হবে, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার মর্মমূলে রয়েছে নিরপেক্ষতার ধারণা।”

XS
SM
MD
LG