বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠার ৭ ঘণ্টা পর তাঁকে দেবহাটা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ দীপ্ত টেলিভিশন ও বাংলা ’৭১ নামের একটি পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। তিনি সাতক্ষীরা শহরের লস্করপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
তাঁর সঙ্গে আটক অন্য দুজন হলেন- উপজেলার ঢেবুখালী গ্রামের রেজাউল করিম ও চালতেতলা এলাকার লুৎফর রহমান।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন লোক ধরে নিয়ে যায়। সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে তাকে একটি মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এরপর থেকে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ১১টার দিকে পুলিশ সাংবাদিকদেরকে জানায়, রঘুনাথ খাঁসহ তিনজনকে দেবহাটা থানায় একটি নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রঘুনাথ খাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়া রাণী খাঁ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন লোক তাঁকে (রঘুনাথ) সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তিনি সাতক্ষীরা সদর থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেন। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত কোথাও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশও তাঁর আটকের কথা স্বীকার করেনি। রাত ১১টার পরে জানতে পারি দেবহাটা থানা পুলিশর হেফাজতে আমার স্বামী রয়েছের। একটি নাশকতার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘গত শনিবার গভীর রাতে একদল লোক তাদের সাতক্ষীরা শহরের লস্করপাড়ার বাসায় এসে প্রথমে ডাকাডাকি করে। আমরা ভয়ে কোনো সাড়াশব্দ না দিলে পরে তারা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে চলে যায়’।
দেবহাটা থানা জানায়, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় দেবহাটার খলিশাখালী সাতমরা এলাকা থেকে তাঁকেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রঘুনাথের বিরুদ্ধে নাশকতার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘রঘুনাথ খাঁসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সোমবার নাশকতার অভিযোগে মামলা করেছেন দেবহাটা থানার উপপরিদর্শক লাল চাঁদ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন উপজেলার ঢেবুখালী গ্রামের রেজাউল করিম ও চালতেতলা এলাকার লুৎফর রহমান’।
এ ছাড়া একটি চাঁদাবাজির অভিযোগে রঘুনাথের বিরদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁর অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, মানবাধিকার সাংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। মঙ্গলবার তিনি এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।