অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিরোধীরা আমার ব্যর্থতা খুঁজে পেলে সংশোধন করব—জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধী দলগুলো তাঁর সরকারের কোনো ব্যর্থতা জানাতে পারলে তা সংশোধনের জন্য প্রস্তুত তিনি।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “জনগণ সফলতা এবং ব্যর্থতার বিচার করবে। এটা বিচার করার দায়িত্ব আমার নয়। জনগণের কল্যাণে সততা ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করলে কেন ব্যর্থ হবো? আমার সফলতা বা সাফল্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জনগণ”।

শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামকে উদ্দেশ্ করে বলেন, “যেহেতু আপনি খুব আগ্রহী, অনুগ্রহ করে আমার ব্যর্থতাগুলো খুঁজে বের করুন, আমি সেগুলো সংশোধন করব”।

তিনি বলেন, সরকার গঠনের পর তৃণমূলের মানুষ ভালো থাকবেন সেই আকাঙ্খা নিয়ে তিনি কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, “মানুষ এখন সুবিধা পাচ্ছে। গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে যে আমূল পরিবর্তন হয়েছে তা প্রবীণরা বুঝতে পারবেন, কিন্তু আজকের প্রজন্ম তা বুঝতে পারবে না”।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রয়াত জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে পুনর্বাসন করেন। সংবিধানের দুটি ধারা পরিবর্তন করে জিয়া তাদের রাজনীতি করতে দেন এবং ভোটের অধিকার দেন। গোলাম আযমসহ অনেক যুদ্ধাপরাধীকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী বানিয়েছেন”।

তিনি বলেন, “জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন। এভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা একটি জাতির জন্য লজ্জাজনক। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা জিয়ার সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়। জিয়া অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় তারা অপমানিত হন। তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতে চায়নি”।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়”।

অন্য সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক নেতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি, এটি দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার মূল্যকে প্রভাবিত করেছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু সেখানে কারিগরি ব্যক্তি খুঁজে পেতে অসুবিধা হচ্ছে। বিদেশ থেকে অনেককে এনে চাকরি দেওয়া হয়”।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার সরকার এ খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “এই মুহূর্তে বিসিএসে নতুন কোনো ক্যাডার তৈরির কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে ভবিষ্যতে এটি বিবেচনা করা যেতে পারে”।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্কাউট প্রশিক্ষণ দেওয়ার আহ্বান শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের স্কাউট প্রশিক্ষণ দেয়ার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার গাজীপুরের মৌচাকে অবস্থিত জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩২তম এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ১১তম জাতীয় স্কাউট জাম্বুরীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ স্কাউটস এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে স্কাউটিং প্রশিক্ষণ পায় সেজন্য আপনাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তা হলে সোনার বাংলা বা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের দেশে যোগ্য নাগরিক গড়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস”।

বাংলাদেশে এখন ২২ লাখ স্কাউট রয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৩০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি চান যে শুধু নির্বাচিত দল নয়, বরং প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন স্কাউট প্রশিক্ষণ লাভ করে।

অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও জাতীয় জাম্বুরী চিহ্নিত একটি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ ও জাম্বুরী সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রধান জাতীয় কমিশনার মোজাম্মেল হক খান বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জার্মানির প্রায় ৮ হাজার স্কাউট সদস্য, ১ হাজার ইউনিট লিডার ও ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস টিমের (আইএসটি) সদস্যসহ প্রায় ১১ হাজার স্কাউট এতে যোগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ স্কাউটস ১৯ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ দিনের আঞ্চলিক ও জাতীয় স্কাউট জাম্বুরীর আয়োজন করেছে।

XS
SM
MD
LG