বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে বাংলাদেশকে সব দিক থেকে স্মার্ট দেশে পরিণত করার মূল চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল সংযোগ (কানেক্টিভিটি)।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) আইটি ও আইটিইএস পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার আয়োজন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ডিজিটাল কানেক্টিভিটি হবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল হাতিয়ার। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ভিত্তিতে গড়ে উঠবে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি।”
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন যে ডিজিটাল পণ্য বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা এবং পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গড়ে তোলা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে অতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তার সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, রোবটিক্স ও বিগ-ডেটা অন্তর্ভুক্ত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শিল্পাঞ্চলে ফাইভ-জি সেবা নিশ্চিত করা হবে।”
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে তরুণ প্রজন্ম এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। তার সরকার ২০১৮ সালে মহাকাশের কক্ষপথে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করে, যা সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নে বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
তার সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা অর্জন করেছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা সাত হাজার ২০০ জিবিপিএস এ উন্নীত করা হবে এবং তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের পর তা হবে ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস।”
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সৌদি আরব, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া ও ভারতকে ব্যান্ডউইথ ইজারা দিয়ে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৪৮ লাখ ১০ হাজার ডলার আয় করছে। বাংলাদেশকে আর বিদেশি স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন যে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ গিগাবাইট ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা জনগণ ও সরকারি অফিসগুলোতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
“অবকাঠামো ব্যবহার করে সারাদেশে আট হাজার ৬০০টি ডাকঘর ডিজিটাল করা হয়েছে। বর্তমানে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডিজিটাল বৈষম্য দূর এবং দাম কমানো হয়েছে;” জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।