অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন জালিয়াতির জন্য অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের


আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিও থেকে নেওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানি একটি অজানা স্থান থেকে বিনিয়োগকারীদের সম্ভাষণ জানাচ্ছেন।( ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।
আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিও থেকে নেওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানি একটি অজানা স্থান থেকে বিনিয়োগকারীদের সম্ভাষণ জানাচ্ছেন।( ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।

ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারে নাটকীয় পতনের পর, তিনি ঝড়ের মুখে পড়েছেন।

আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো বাজার কারসাজি এবং জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত; যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এমন অভিযোগ করার পর আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে "মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়" বলে অভিহিত করেছে।

বন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিমানবন্দর, খনি এবং নবায়নযোগ্য শক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আদানি গ্রুপের ব্যাবসার বিস্তার। এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠির এমন ক্ষতি, ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে। এই কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতাও তৈরি হয়েছে। ভারতের বিরোধী দলগুলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক ব্যবসায়ীর অনিয়মের তদন্ত দাবি করার পর আদানির বিষয়ে রাজনৈতিক ঝড়ের সৃষ্টি হয়।

গত এক দশকে আদানি সাম্রাজ্যের চোখ ধাঁধাঁনো উত্থান গৌতম আদানিকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের কাতারে নিয়ে যায়। ফোর্বস পত্রিকার মতে, আদানি জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত বার্নার্ড আর্নল্ট এবং ইলন মাস্কের পর, বিশ্বের তৃতীয় ধনী এবং এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন।

হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের ব্যবসায়িক অনুশীলন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার পর, আদানি গ্রুপের সাতটি তালিকাভুক্ত সংস্থা তাদের বাজার মূলধনের প্রায় অর্ধেক হারিয়েছে। এক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, করমুক্ত অফশোর অঞ্চলে মাধ্যমে অর্থ সররাহ করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছিলো আদানি গ্রুপ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম অতিমূল্যায়ন করা হয়েছে এবং গত তিন বছরে ঐসব শেয়ারের দাম ৮০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।

হিন্ডেনবার্গ একটি ছোট বিনিয়োগ সংস্থা যা ওয়াল স্ট্রিটে একটি শর্ট সেলার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ফার্মটি কর্পোরেট অন্যায় অনুসন্ধান করে এবং কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেলে তা থেকে উপার্জন করে।

হিন্ডেনবার্গ বলেছে, আদানি গ্রুপের "নির্লজ্জ স্টক ম্যানিপুলেশন" এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতি "কর্পোরেট ইতিহাসের বৃহত্তম প্রতারণা"। প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, "ব্যাপক পরিমানের ঋণ" গ্রুপটিকে একটি অনিশ্চিত আর্থিক পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে।

৪১৩ পৃষ্ঠার এক প্রতিক্রিয়ায় আদানি গ্রুপ এই প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন এবং " উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভুল তথ্যের বিদ্বেষপূর্ণ সংমিশ্রণ" এবং "বাসি, ভিত্তিহীন এবং অসম্মানজনক অভিযোগের সংমিশ্রণ" বলে অভিহিত করেছে।

বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় আদানি বলেন, তার গ্রুপের মৌলিক ভিত্তি “শক্তিশালী” এবং ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে তাদের রেকর্ড “অনবদ্য”। আদানি গ্রুপ, এই প্রতিবেদনকে "ভারতের প্রবৃদ্ধির ইতিহাস এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার" উপর আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছেন, আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য নিয়ে বিতর্ক ভারতে বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে তিনি মনে করেন না।

শুক্রবার ব্রডকাস্টার নিউজ ১৮-কে তিনি বলেন, ভারত এখনও একটি "ভীষণ সুনিয়ন্ত্রিত আর্থিক বাজার"।

XS
SM
MD
LG