বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো বহিঃশক্তির আক্রমণ হলে উপযুক্ত জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “কিন্তু বহিঃশক্তির যেকোনো আক্রমণ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে পর্যাপ্ত সক্ষম করে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি”।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দশম টাইগারস রিইউনিয়নে ভাষণে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধ চায় না”।
তিনি বলেন, “আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাসী”।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সম্প্রতি মাওয়া-জাজিরায় শেখ রাসেল সেনানিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং মিঠামইন, রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন সেনানিবাস নির্মাণের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আর্মি এভিয়েশন ফরওয়ার্ড ঘাঁটি এবং লালমনিরহাটে এভিয়েশন স্কুল নির্মাণের কাজও চলছে”।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, সরকার সেনাবাহিনীতে নতুন কম্পোজিট ব্রিগেড ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড যুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, “প্রতিটি বাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী অস্ত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে”।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বাংলাদেশকে শান্তির দেশে রূপান্তর করতে চায়। “এ জন্য আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি”।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করেছে”।
তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হয়েছে, যাতে উন্নত দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “বিভিন্ন দেশে খাবারের দাম অত্যধিক বেড়েছে এবং খাবার পেতেও সমস্যা হচ্ছে”।
তিনি বলেন, তবে বাংলাদেশের ভূমি উর্বর এবং মানুষও অনেক দক্ষ।
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে যে জমি আছে, তারা তাতে ফসল ফলাক; যাতে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার আঘাত বাংলাদেশে না লাগতে পারে”।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, “এটি সত্য কিন্তু এর পাশাপাশি আমাদের এটা (খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি) ততদিন অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন না এই (রাশিয়া-ইউক্রেন) যুদ্ধ থামে এবং এই মন্দার কবল থেকে বিশ্ব মুক্তি পায়”।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা যাতে বাংলাদেশে প্রভাব না ফেলতে পারে সেজন্য কঠোর পরিশ্রম করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং খোলা জিপে চড়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
তিনি একটি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেন।