অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২০ ফেব্রয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, “এই ভাষা আন্দোলনের জন্য বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন। তার কোনো অবদান না থাকলে তিনি কেন জেলে ছিলেন?” শেখ হাসিনা বলেন, “জয় বাংলা’ শ্লোগানটি মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত করেছিল। অথচ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।আসলে তার (বঙ্গবন্ধুর) নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভাষা আন্দোলনেও তার অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এমনকি অনেক বিজ্ঞজনও বলেছিলেন যে তিনি (বঙ্গবন্ধু) সেসময় জেলে থাকায় তার কোনো অবদান নেই। পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যে তিনবার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালীন ছাত্রনেতারা তার সঙ্গে দেখা করতেন এবং ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে তার নির্দেশনা নিতেন।”

বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অফ ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন বঙ্গবন্ধু’ বইগুলো পড়লে এসব তথ্য জানা যাবে। ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অফ ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন বঙ্গবন্ধু’- বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ডের ১১৩-১৩০ পৃষ্ঠা থেকে, সুনির্দিষ্ট তারিখ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়া ছাত্র নেতাদের নাম এবং ভাষা আন্দোলনের সময় তার ভূমিকা সম্পর্কে জানা যায়।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

যারা একুশে পদক পেলেন

খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবর রহমান ভাষা আন্দোলনে তাদের ভূমিকার জন্য এই পদক পেয়েছেন।

অভিনয়ে অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন মাসুদ আলী খান এবং শিমুল ইউসুফ। সঙ্গীতের জন্য মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম এবং ফজল-ই-খুদা (মরণোত্তর)। আবৃত্তির জন্য জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও শিল্পকলার (কলা) জন্য নওয়াজিশ আলী খান এবং ছবি আঁকার জন্য কনক চাঁপা চাকমা।

মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে ,মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আব্দুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট ড. মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর) ও আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান একুশে পদক পেয়েছেন।

আর, শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজ সেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একুশে পদক পেয়েছে। প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি একটি স্বর্ণপদক, একটি পদকের রেপ্লিকা, একটি সম্মাননা সনদ এবং চার লাখ টাকার চেক পেয়েছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রবর্তিত হয় একুশে পদক।

XS
SM
MD
LG