বাংলাদেশের সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজের নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত ( ইভটিজিং)করার জের ধরে শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান তালুকদার জানান, “ছাত্রীকে উত্যক্ত করার জের ধরে শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
এদিকে, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সংঘর্ষের প্রতিবাদে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষর্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দিয়ে বলেছেন, “এই সময়ের মধ্যে উত্যক্তকারী যুবক ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।” মেডিকেল কলেজের নারী শিক্ষার্থী উত্যক্ত করা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশের প্রতি আহবান জানান তারা।
উল্লেখ্য রবিবার (১৯ ফেব্রয়ারি) সন্ধ্যায় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজে অধ্যরনরত নেপালের দুই নারী শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী চণ্ডিপুলের ফুলকলি মিষ্টির দোকানে যান। ফিরে আসার সময় স্থানীয় এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক তাদের উদ্দেশ্যে অশালীন উক্তি করেন এবং উত্যক্ত করেন। ঐ অটোরিকশা চালক নর্থ ইস্ট হাসপাতালের অদূরে অবস্তিত সুমাইয়া কমপ্লেক্স মার্কেটের নিচ তলার বাদশা টেলিকম নামের একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকানের মালিক গুলজার আহমদের আত্মীয়।
ইভটিজিংয়ের শিকার দুই শিক্ষার্থী কলেজে গিয়ে সহপাঠীদের বিষয়টি জানালে, কয়েকজন শিক্ষার্থী বাদশা টেলিকমে এসে বিচার দাবি করেন। এসময় দু’পক্ষের মাঝে বাবকবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শামিল হয়ে এসময় স্থানীয় অটোরিকশা চালকরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন।
ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮-১০ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহত হয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার সহকারী কমিশনার (এসি) মাঈন উদ্দিন খান। এসময় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।