অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণা অত্যাবশ্যক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিতকরণ ও বিকাশে গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমি সবসময় গবেষণার উপর জোর দিই। কারণ, গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুর সমৃদ্ধি সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রয়ারি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে, রাজধানী ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা গবেষণার জন্য ফেলোশিপ দেওয়ার পদক্ষেপ নেবে। আমি মনে করি এই ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব আছে পৃথিবীর সব ভাষা সংরক্ষণ করা, এগুলো নিয়ে গবেষণা করা এবং ভাষার ইতিহাস জানা। আমি মনে করি এটি করা যেতে পারে।”

ভাষা গবেষকদের ফেলোশিপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে তহবিল-এর ব্যবস্থা করবেন বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।তিনি আরো উল্লেখ করেন যে গবেষণার সুবাদে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বলেন, “এখন বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপকভাবে গবেষণার প্রয়োজন।”

শেখ হাসিনা জানান যে তার সরকার বাংলাদেশের দুই কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে ফেলোশিপ ও উপবৃত্তি এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করছে। তিনি আরো জানান, তার সরকার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মেয়াদে সাক্ষরতার হার মাত্র ৪৫ শতাংশ থেকে ৬৫ দশমিক পাঁচ শতাংশে উন্নীত করেছিল। সেই সময়ের অর্জনের জন্য ইউনেস্কোর কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিল। তারপর তার সরকার উচ্চ শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদানের জন্য পুরস্কারের অর্থ দিয়ে একটি তহবিল গঠন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা এখন সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক দুই শতাংশে উন্নীত করেছি। সুতরাং, আমরা (শিক্ষার ক্ষেত্রে) অগ্রসর হচ্ছি।” তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে ইনস্টিটিউটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা চার প্রাপকের হাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক তুলে দেন। হাবিবুর রহমান এবং রঞ্জিত সিংহকে জাতীয় পদক প্রদান করা হয় এবং মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহেন্দ্র কুমার মিত্র এবং মাতৃভাষা প্রেমীদের ওয়ার্ল্ড সোসাইটি, ভ্যাঙ্কুভার, কানাডাকে আন্তর্জাতিক পদক প্রদান করা হয়। মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভারস অফ ওয়ার্ল্ড সোসাইটির সভাপতির পক্ষে পদক গ্রহণ করেন মো. আমিনুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) এবং বাংলাদেশে ইউনেস্কোর অফিস প্রধান ও প্রতিনিধি সুসান মারি ভাইজ। বহুভাষিক বিশ্বে বহুভাষিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে, বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আলজেরিয়া, জাপান, চীন, রাশিয়া ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের শিশুরা প্রধানমন্ত্রীকে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় শুভেচ্ছা জানায়।

XS
SM
MD
LG