বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য জাপান সরকার ইউএনএইচসিআরের মাধ্যমে ৪৫ লাখ ইউএস ডলার (৬০০ মিলিয়ন জাপানি মুদ্রা) অনুদান দেবে। এ জন্য জাপান ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) একটি চুক্তি সই করেছে। চুক্তির আওতায় কক্সবাজার এবং ভাসানচরে উদ্বাস্তু ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার উন্নতির মাধ্যমে জীবন রক্ষা এবং জীবন রক্ষাকারী পরিষেবাগুলোকে শক্তিশালী করতে এই অনুদান ব্যবহার করা হবে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে নিয়োজিত জাপানের দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ আজ এ বিষয়ে একটি স্মারক বিনিময় করেন।
বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ বলেছেন, “ইউএনএইচসিআরের কিছু প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও সহায়তা কর্মসূচির পাশাপাশি কক্সবাজার এবং ভাসানচরে শিবিরে জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রমের জন্য জাপান সরকারের এই নতুন অনুদান এখন এমন একটি সংকটময় সময়ে এসেছে যখন আমরা ইতিমধ্যেই বিদ্যমান তহবিল সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। যা উদ্বাস্তুদের খাদ্যপ্রাপ্তি হ্রাস করেছে”।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের কর্মসূচিতে সহায়তার ক্ষেত্রে জাপান আরও একবার এগিয়ে গেল। “আমরা আশা করি এই অবদান অন্য দাতাদের জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে যাতে এটি অনুসরণ করা যায়”।
গত মাসে কক্সবাজার সফরের সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিবন্ধনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি একটি জাপানি কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতায় শক্তিশালী জীবিকা সহায়তার প্রত্যক্ষ করতে পেরেও আনন্দিত, যেখানে রোহিঙ্গা নারীরা স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন করে”।
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, “আমরা একটি স্বেচ্ছাসেবী, নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের সমাধানে জড়িত থাকব এবং শরণার্থী এবং আতিথ্যদানকারী সম্প্রদায়ের উন্নত জীবনযাপনের সক্ষমতা অর্জনে ইউএনএইচসিআর এবং অন্য মানবিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা করব”।
ইওয়ামা আশা প্রকাশ করেন, জাপান সরকারের সহায়তা রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় উভয় সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার উন্নতি করবে।
তিনি বলেন, “এ ছাড়াও, আমি বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ সংস্থা এবং এনজিওগুলোর অক্লান্ত কর্মকাণ্ডে গভীরভাবে মুগ্ধ হয়েছি। আমি তাদের জন্য ক্রমাগত সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছি এবং আমরা তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবো”।
২০১৭ সালের অগাস্টে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আগমনের পর থেকে জাপান আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাসান চরে বিভিন্ন প্রকল্পে ২০ কোটি ৪০ লাখ ইউএস ডলারের বেশি সহায়তা করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, ওয়াশ, আশ্রয়, সুরক্ষা এবং লিঙ্গভিত্তিক সহায়তা।