অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতন: হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন, ৬ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত


বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করার পর, বুধবার (১ মার্চ) আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে, এ ঘটনার জন্য ৬ জনকে দায়ী করে বলা হয়েছে, “এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। হল প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটর এ ঘটনার ব্যাপারে দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিশববিদ্যালয়ের প্রক্টর তার দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও উদাসীনতা দেখিয়েছেন।”

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে নির্যাতিত হওয়ার পরও অন্তরার জোরাজুরিতে ভিকেটিম মুচলেকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। ভিকমটিমকে হল থেকে বিতাড়িত করতে চাপ দিলে, হল প্রভোস্ট তাকে হলত্যাগের নির্দেশ দেন। পরে মুচলেকা দিতে তাকে বাধ্য করা হয়।

আদালত শুনানি নিয়ে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন আইনজীবী আছে কিনা জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে বুধবার আদেশের দিন ধার্য করেন। রিট আবেনকারী আইনজীবী মো. মহসিন সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্ত কমিটিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লিখিত বক্তব্য এবং অডিও ক্লিপসহ তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।”

“বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, লিমা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মুয়াবিয়া জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লিমা বিচারিক তদন্তে এসেছে। আর বাকিরা দুই তদন্তেই আছেন; জানান রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. মহসিন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মোহসীন জনস্বার্থে রিট আবেদনটি দায়ের করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

এদিকে, ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর আবাসিকতা বাতিল করেছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষ। তাদের সবাইকে আগামী ১ মার্চের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সোমবার (২৭ ফেব্রয়ারি) এ ঘটনার দুটি তদন্ত প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দাখিল করা হয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা হলেন ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান মীম, ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোয়াবিয়া। অন্তরা ছাড়া সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

XS
SM
MD
LG