গত তিন মাসে ইরানের বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়নরত শত শত ছাত্রী তাদের শ্রেণিকক্ষে কথিত বিষাক্ত ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এদের কেউ কেউ শেষ পর্যন্ত দুর্বল হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
ইরানের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে এসব ঘটনা প্রত্যাখ্যান করে। তবে এখন স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে চিহ্নিত প্রায় ৩০টি স্কুলের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বলে এটিকে স্বীকার করেছেন। কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, ৮ কোটি মানুষের এই দেশে মেয়েদের স্কুল বন্ধ করতে এটি করা হয়েছে।
ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর গত সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভের মুখে থাকা ইরানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করেনি। তবে এই হামলার ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কেবল মাত্র শিক্ষার জন্য মেয়েদের বিষ প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে দেশটি এ্ররকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি। ইরান প্রতিবেশী আফগানিস্তানের তালিবানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যেন তারা মেয়ে ও নারীদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দেয়।
ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কোমে নভেম্বরের শেষদিকে প্রথম শিয়া ধর্মতত্ত্ববিদ এবং তীর্থযাত্রীদের কেন্দ্রস্থল, নূর ইয়াজদানশহর কনজারভেটরির শিক্ষার্থীরা নভেম্বরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডিসেম্বরে তারা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।
শিশুরা মাথা ব্যথা, বুক ধড়ফড়, অলস বোধ করা বা নড়াচড়া করতে অক্ষমতার অভিযোগ করে। অসুস্থতায় কেউ কেউ গন্ধযুক্ত ট্যাঞ্জারিন, ক্লোরিন বা ক্লিনিং উপাদান ইত্যাদির গন্ধের কথা বলেছেন।
প্রথমে কর্তৃপক্ষ মামলাগুলোর কোনো যোগসূত্র মেলাতে পারেনি। ইরানে শীতকালে তাপমাত্রা প্রায়শই রাতে হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়। অনেক স্কুল প্রাকৃতিক গ্যাস গরম রাখা হয়, ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া হতে পারে যার কারণে মেয়েরা প্রভাবিত হয়েছে। দেশটির শিক্ষামন্ত্রী প্রাথমিকভাবে এসব খবর প্রত্যাখ্যান করেছেন।
প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির মধ্যে কেবল অল্পবয়সী মেয়েদের শিক্ষা দেয় এমন স্কুল থাকায় সন্দেহ ঘনিয়ে উঠছে যে এটি কোন দুর্ঘটনা নয়। । তেহরানে কমপক্ষে একটি ঘটনা এবং কোম এবং বোরোউজার্ডে বাকি ঘটনা ঘটে। অন্তত একটি বালক বিদ্যালয়কেও টার্গেট করা হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র পেদরাম পাকাইন বলেন, বিষক্রিয়া কোনো ভাইরাস বা মাইক্রোব থেকে আসেনি। তিনি আর বিস্তারিত কিছু বলেননি।