অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউক্রেন ও চীন বিষয়ে ট্রান্সআটলান্টিক ঐক্যে জোর দিয়েছেন বাইডেন এবং শোলজ


ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠক করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৩ মার্চ, ২০২৩।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠক করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৩ মার্চ, ২০২৩।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের মধ্যে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দুটি মূল বিষয় ছিলো ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন এবং রাশিয়াকে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য অস্ত্র সরবরাহ মোকাবেলায় ট্রান্সআটলান্টিক ঐক্য বজায় রাখা।

এই বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো, যখন ইউরোপে যুদ্ধ বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, যদিও এই মনোভাব এখনো আমলে নেওয়ার মতো নয়।তবে, এই মনোভাব দীর্ঘমেয়াদে মস্কো বিরোধী একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

ওলাফ শোলজের এই হোয়াইট হাউজ সফরে আনুষ্ঠানিকতা পরিহার করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ছিলো, এমন একটি চিত্র তুলে ধরা যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা থামানোর জন্য নেটোর দুই প্রধান মিত্র খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

শোলজ ২০২২ সালের ফেব্রয়ারিতে সর্বশেষ হোয়াইট হাউজ সফর করেন। ঐ সময়ে পুতিন ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করছিলেন।

জো বাইডেন জার্মানির চ্যান্সেলরকে তার “শক্তিশালী ও স্থিতিশীল নেতৃত্বের” জন্য ধন্যবাদ জানান। বাইডেন বলেন, “আমরা এটা পরিষ্কার করে দিয়েছি, যদি সে ক্ষান্ত না দেয়, তবে আমরা দুজনেই এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাবো। আর, জার্মানির সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি এবং রাশিয়ার জ্বালানি উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে জার্মানিকে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে, অভ্যন্তরীনভাবে “ঐতিহাসিক পরিবর্তন”-এর প্রতি আমাদের প্রতিশ্রতি নিয়ে এগিয়ে যাবো।”

ওয়াশিংটনের পর, বার্লিন, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা। রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন এবং ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের প্রায় ১৫০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জার্মানি।

শোলজ বলেন, “এই মুহূর্তে, আমার মনে হয়, এই বার্তাই আমাদের দেওয়া উচিৎ, যতদিন প্রয়োজন তত দিন সহায়তা অব্যহত রাখা হবে।”

উভয় নেতাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির প্রতি দৃঢ সমর্থন অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কেননা, যুদ্ধ শুরুর এক বছর পর, যখন এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি রোডম্যাপ জরুরি হয়ে পড়েছে, তখন জেলেন্সকি তার দেশকে রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

জার্মানির বেশিরভাগ নাগরিক ইউক্রেনকে সমর্থন করে। তার পরও, গত সপ্তাহে বার্লিনের সড়কে যুদ্ধ এবং কিয়েভে অস্ত্র পাঠানোর বিপক্ষে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে এই বিক্ষোভ হয়।

কুইন্সি ইনস্টিটিউটের ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের রিসার্চ ফেলো সুজান লফটাস বলেন, “মূল্যস্ফীতি হ্রাস আইনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উদ্যোগ হয়তো জার্মানির অর্থনৈতিক সংকটকে আরো বাড়িয়ে দেবে।” এক্ষেত্রে তিনি, মূল্য বৃদ্ধি ও জলবায়ুবান্ধব বিনিয়োগের প্রভাব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে রক্ষার উদ্দেশে করা সাম্প্রতিক আইনের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “এই আইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করেছে, জার্মানির মোটরগাড়ি শিল্পকে হুমকিতে ফেলেছে। আর এই আইনের আ্ওতায় গ্রিন এনার্জি’র জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার জন্য প্রলুব্ধ করেছে।”

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ নিয়ে উদ্বেগের কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বাইডেন এবং শোলজ, রাশিয়াকে চীন যে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করার কথা বিবেচনা করছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উভয় নেতা, বেইজিংকে তা না করার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন।

জেফ কাষ্টার এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।

XS
SM
MD
LG