ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীর একটি জ্বালানি গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর ও ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ এক ডজনেরও বেশি মানুষের খোঁজে শনিবার তল্লাশি চালিয়েছে উদ্ধার দল ও দমকল কর্মীরা।
উত্তর জাকার্তার ঘনবসতিপূর্ণ তানাহ মেরাহ এলাকার কাছে অবস্থিত প্লাম্পাং ফুয়েল স্টোরেজ স্টেশনটি পরিচালনা করে রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি পারতামিনা। এই প্রতিষ্ঠানটি ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ সরবরাহ করে।
দমকল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্যরাতের ঠিক আগে, অন্তত ২৬০ জন দমকল কর্মী, ৫২টি ফায়ার-ইঞ্জিন ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে, দুই ঘন্টা ধরে জ্বলতে থাকা এই আগুন এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।
প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গেছে, কালো ধোঁয়া ও কমলা রঙের আগুনে আকাশ ভরে যাওয়ায় শত শত মানুষ আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াচ্ছে।
জাভার পশ্চিমাঞ্চলের পারতামিনা বসতির এরিয়া-ম্যানেজার ইকো ক্রিস্টিয়াওয়ান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে ভারী বৃষ্টিপাতের সময় একটি পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার পর সেখানে বজ্রপাত হলে আগুনের সূত্রপাত হয়।
আশেপাশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা জ্বালানি তেলের তীব্র গন্ধ পেয়েছিলেন।যার ফলে কিছু লোক বমি করে। এর পর, দু'বার বজ্রপাত হয় এবং রাত ৮ টার দিকে একটি বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে।
উদ্ধারকর্মীরা ১৬ জনকে খুঁজছেন। এরা আগুনের ঘটনার মধ্যে নিখোঁজ বা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।পাঁচটি হাসপাতালে প্রায় ৪২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দেশটির জাতীয় পুলিশ বাহিনীর প্রধান লিস্তিও সিজিত প্রাবোউ জানিয়েছেন, ১৩শ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তারা ১০টি সরকারি অফিস, একটি রেড ক্রস কমান্ড পোস্ট এবং একটি স্পোর্টস স্টেডিয়ামে আশ্রয় নিয়েছেন।আগুন লাগার কারণ খুঁজতে তদন্ত চলছে; আর এ বিষয়ে কয়েক ডজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
২০১৪ সালে একই জ্বালানি ডিপোতে আগুন লেগেছিলো। সে সময় অন্তত ৪০টি বাড়ি পুড়ে গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিষয়ক মন্ত্রী এরিক থোহির সংবাদদাতাদের বলেন, এই ঘটনায় প্রমাণিত হয় প্লাম্পাং অঞ্চলটি মানুষের বসবাসের জন্য নিরাপদ নয়। সরকার উত্তর জাকার্তার তানজুং প্রিয়ক বন্দরে জ্বালানি স্টোরেজ ডিপো স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। আর, আবাসিক এলাকার জন্য নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার চিন্তা করছে।