ঢাকার গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিক বাজারের বিস্ফোরিত ভবনে দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারফাইটিং ইউনিট। বুধবার (৮ মার্চ) সকাল থেকে এই উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল মঙ্গলবার ওই ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন জানান, সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধারকাজ শুরু করলেও এখনো কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।
এদিকে, সিদ্দিক বাজারের ওই ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড রক্ষণাবেক্ষণ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের উপ-অতিরিক্ত পরিচালক শাহজাহান সিকদার।
মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হন।
শাহজাহান সিকদার জানান, বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে বিস্ফোরণটি ঘটে।
বিস্ফোরণে নিহত ১৮ জনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে ১৭ জনের নাম–পরিচয় হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ে নথিভুক্ত রয়েছে। বাকি একজনকে স্বজনেরা আগেই নিয়ে যান।
সম্রাট (২৮) নামের ওই ব্যক্তি এই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। তিনি বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হওয়া ভবনের একটি দোকানে কাজ করতেন। দোকান মালিক সুমনও (২১) মারা গেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে কর্তৃপক্ষ ১৭ জনের লাশ হস্তান্তর করেছে।
নিহত ১৭ জন হলেন- সুরিটোলার মোমিনের ছেলে সুমন (২১)। যাত্রাবাড়ীর মোশাররফ হোসেনের ছেলে মুনসুর হোসেন (৪০); বরিশালের দুলাল মৃধার ছেলে ইসহাক মৃধা (৩৫); বংশালের হোসেন আলীর ছেলে মো. ইসমাইল (৪২), দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রাহাত (১৮), চাঁদপুরের বিল্লাল হোসেনের ছেলে আলামিন (২৩), কিশোরগঞ্জের হাসেম মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮); যাত্রাবাড়ীর কালা চান মীরের ছেলে ইদ্রিস মীর (৫০); চকবাজারের আবুল হাসেমের ছেলে মমিনুল ইসলাম (৩৮), মমিনুল ইসলামের স্ত্রী নদি বেগম (৩৪), মুন্সীগঞ্জের জমির উদ্দিনের ছেলে মঈন উদ্দিন (৫০), বংশালের ইউনুস হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২০), মানিকগঞ্জের সাহেব আলীর ছেলে ওবায়দুল হাসান (৫৫), মুন্সীগঞ্জের মোজাম্মেল হকের ছেলে আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), বংশালের আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী আকুতি বেগম (৭০); যাত্রাবাড়ীর মোহাম্মদ ভূইয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫) ও কেরানীগঞ্জের দুলালের ছেলে আব্দুল হাকিম সিয়াম (১৮)।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, বিস্ফোরণের পর থেকে ৩ থেকে ৪ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১১ জন।
গুলিস্তান বিস্ফোরণের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।