গত মাসের ভূমিকম্পের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এখনও সংগ্রাম করছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশ। এর মাঝে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, কীভাবে এতোগুলো অপেক্ষাকৃত আধুনিক ভবন ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়লো। কারণ হিসেবে কিছু প্রকৌশলী তুরস্কের সরকারী নীতিমালার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বর্ণনা দেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ভবনগুলো “তরল পদার্থে রূপান্তরিত” হয়েছে। প্রতিটি তলা অপরটির ওপর ধ্বসে পড়ে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন আসে, কেনো কিছু ভবন অক্ষত রইলো, আর কেনই বা বাকিগুলো ধসে পড়লো?
ভূমিকম্প যে এলাকায় আঘাত হেনেছে তার এক প্রান্তে অবস্থিত শহর আদানার পুরকৌশলীদের চেম্বারের সভাপতি হাসান আকসুঙ্গুর ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, ভবন নির্মাণের মূল ধাপগুলো, যেগুলোকে তিনি ইন্টারলকিং রিংস হিসেবে আখ্যায়িত করেন—ব্যর্থ হয়েছে।
আকসুঙ্গুর আরও বলেন, “বিষয়টা হল, এসব ভবনের (যেগুলো ধসে পড়েছে) পাশেই অন্যান্য ভবন একই ভূমিকম্পের আঘাত সয়েছে, কিন্তু সেগুলো ধ্বংস হয়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে হয় এসব ধ্বসে পড়া ভবনের নকশায়, নির্মাণ প্রক্রিয়ায় অথবা নিয়ন্ত্রণ ধাপগুলোতে ত্রুটি ছিল”।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সমালোচকরা বলেন, সরকার বারবার অবৈধ ভবন নির্মাতাদের ক্ষমা করেছে। এরদোয়ান এ প্রক্রিয়াকে “জোনিং পিস” প্রক্রিয়া নামে অভিহিত করেন, যার মাধ্যমে নির্মাতারা গুরুতর নিরাপত্তা নীতিমালা এড়িয়ে যেতে পারেন। লাখ লাখ ভবন এভাবেই নিবন্ধিত হয়েছে।
ভূমিকম্পের ঘটনার পর ২০০ জনের চেয়েও বেশি ব্যক্তিকে ভবন নির্মাণ নীতিমালা লঙ্ঘনের সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও শত শত মানুষের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তুরস্কের বিচার সংক্রান্ত মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বিরোধী দলগুলোও অবৈধ ভবন নির্মাণে ক্ষমা প্রক্রিয়ায় সমর্থন দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বিরোধীদের ভূমিকম্পের ফায়দা নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ আনেন। তিনি ১ মার্চ আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা জানি অনেকেই মনেপ্রাণে চাইছেন রাষ্ট্র ও সরকার আমাদের জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংসস্তূপে বিলীন হয়ে যাক”।