অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র ও ‘অরিজিনাল সং’ বিভাগে অস্কার জিতল ভারত


অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে ভারতে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ তথ্যচিত্রের পরিচালক কার্তিকী গনঞ্জালভেস ও প্রযোজক গুনিত মোঙ্গা।
অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে ভারতে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ তথ্যচিত্রের পরিচালক কার্তিকী গনঞ্জালভেস ও প্রযোজক গুনিত মোঙ্গা।

পঁচানব্বইতম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস স্মরণীয় হয়ে থাকল ভারতের জন্য। অস্কার মঞ্চে পুরস্কার উঠল দু’টি ভারতীয় মনোনয়নের হাতে।

রবিবার সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে ভারতে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ জিতে নিল সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রের পুরস্কার। এই তথ্যচিত্রের পরিচালক কার্তিকী গনঞ্জালভেস ও প্রযোজক গুনিত মোঙ্গা। ‘দ্য এলিফ্যান্ট হইস্পারার্স’-এর চিত্রগ্রাহকেরা ছিলেন করণ থাপলিয়াল, কৃশ মাখিজা, আনন্দ বনশল ও পরিচালক কার্তিকী গনঞ্জালভেস। তামিল ভাষায় নির্মিত তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে এক আশ্চর্য সম্পর্কের গল্প যেখানে মানুষ আর বন্য প্রাণীর সঙ্গে গড়ে ওঠে ভালবাসা আর বিশ্বাসের সম্পর্ক। ভারতের দক্ষিণ ভাগের রাজ্য তামিলনাড়ূর মুদুমালাই ন্যাশনাল পার্ক এই তথ্যচিত্রের প্রেক্ষাপট। এখানেই বাস আদিবাসী দম্পতি বোম্মান ও বেল্লি-র। তাদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় এক অনাথ হস্তিশাবক রঘু-র দেখভালের। নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের নানা বাধা-বিপত্তি, সমস্যা পেরিয়েও তারা নিশ্চিত করেছিলেন যাতে দুর্বল, অসুস্থ রঘু শরীর, মনের ক্ষত সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। এই পুরো যাত্রাপথে দু’জন মানুষের সঙ্গে এক বন্য প্রাণীর যে আত্মীয়তা তৈরি হয় তাই নিয়েই নির্মিত ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। একইসঙ্গে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনধারা ও প্রকৃতির সঙ্গে তাদের গভীর যোগাযোগও অনুষঙ্গে উঠে আসে তথ্যচিত্রটিতে। পরিচালক কার্তিকী গনঞ্জালভেস পুরষ্কার মঞ্চে বলেন, “আমি আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি আমাদের ও আমাদের প্রকৃতির মধ্যে যে পবিত্র বন্ধন তার কথা বলার জন্য, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রতি সম্মান জানাতে, অন্যান্য যে প্রাণীদের সঙ্গে আমরা এই পৃথিবীতে আমাদের বসবাস তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে এবং সর্বোপরি সহাবস্থানের কথা বলতে। আমি এই পুরষ্কার উৎসর্গ করছি আমার মা ও ভারতকে।” স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র বিভাগে এটিই ভারতের প্রথম অস্কার জয়।

অন্যদিকে ২০০৯ সালে সেরা স্লামডগ মিলিওনিয়ার সিনেমায় ‘জয় হো’ গানটির জন্য ‘অরিজিনাল সং’ বিভাগে অস্কার জিতেছিলেন ভারতের সঙ্গীত পরিচালক এ.আর. রহমান। যদিও ড্যানি বয়েল পরিচালিত সিনেমাটি ভারতীয় ছিল না, ছিল যুক্তরাজ্যের। চোদ্দ বছর পর একই বিভাগে প্রথম বার কোনও ভারতীয় সিনেমার গান অস্কার জিতে নিল। পুরস্কার উঠল ইতিমধ্যেই এস এস রাজামৌলি পরিচালিত ‘আরআরআর’ সিনেমার সারা দেশ ও সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দেওয়া গান ‘নাটু নাটু’-র হাতে। ভারতীয় সিনেমায় ব্যবহৃত কোনও ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষার গানের এই প্রথম অস্কার জয়। এই গানের সঙ্গীত পরিচালক এম.এম. কীরাভানি ও গীতিকার চন্দ্রবোস। গানটি ‘আরআরআর’-এ গেয়েছেন রাহুল শিল্পীগুঞ্জ ও কালা ভৈরব, যাঁরা গানটি মনোনীত হওয়ায় এদিন অস্কার মঞ্চে রিহানা, লেডি গাগা-র পাশাপাশি মঞ্চে ‘লাইভ’ পরিবেশন করেন। অস্কার মঞ্চে পুরস্কার নিয়ে সঙ্গীত পরিচালক এম.এম. কীরাভানি বলেন, “আমি শৈশবে ছুতোরদের গান শুনে বড় হয়েছি আর আজ আমি এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি। আমার, রাজামৌলির আর আমার পরিবারেরও মনে কেবল একটাই ইচ্ছে ছিল। আরআরআর-কে জিততেই হবে। এবং তা আমাকে যেন শীর্ষে পৌঁছে দেয়।” এই জয়কে তিনি ভারতের গর্ব বলেও উল্লেখ করেন।

XS
SM
MD
LG