অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও উন্নত দেশে পরিণত হতে প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে বাংলাদেশের—যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস


যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, আগামী দশকগুলোতে একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের যা যা প্রয়োজন তা রয়েছে।

পিটার হাস বলেন, “সামনের পথ নিশ্চয়ই মসৃণ নয়। আর তা মাথায় রেখেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্রকে পুষ্ট করতে, শাসনব্যবস্থার উন্নতি করতে, প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে এবং জনগণকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিতে হবে”।

পিটার হাস বুধবার (১৫ মার্চ) বাংলাদেশে তার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক নিবন্ধে এসব কথা বলেন।

পিটার হাস বলেন, “আমি যখন বাংলাদেশের কথা চিন্তা করি, তখন একটি উপমা মাথায় আসে, আর তা হলো—আমি এমন একটি গাড়িতে চড়ছি, যেখানে সড়কে চলাচল অতিবাহিত সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে। আমি যখন গাড়ির রিয়ারভিউ আয়নায় তাকাই, তখন আমি অবাক হয়ে যাই যে মাত্র ৫১ বছরে বাংলাদেশ কত দূর এগিয়েছে”।

তিনি আরও বলেন, “আমি এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি, যে দেশ তার স্বাধীনতা ও গর্বের ওপর ভর দিয়ে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে। বর্তমানে যা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে”।

পিটার হাস বলেন, “আমি যখন গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে রাস্তার দিকে তাকাই, তখন আমি কল্পনা করি আগামী ৫১ বছরে বাংলাদেশ কতদূর যেতে পারে। বাংলাদেশ এবং এর জনগণ গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে আছেন এবং তারাই ভবিষ্যতে গাড়িটি যে দিক ও গতিতে ভ্রমণ করবে তা নির্ধারণ করবে”।

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এই যাত্রায় আপনাদের সঙ্গে ছিল, থাকবে। আমরা আপনাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করার জন্য আমাদের সাধ্যমতো সবকিছু করব”।

পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশের যাত্রাপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আসন্ন সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে পছন্দের কেউ নেই। তবে আমরা দেখতে চাই যে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আমরা চাই, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের নিজেদের সরকার তারাই নির্বাচন করুক। গণতন্ত্রকে সমর্থন করা, ব্যক্তি অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পথ চলা আরও নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে সাহায্য করে।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। এই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, গণমাধ্যম থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নাগরিক সমাজ থেকে রাজনৈতিক দল—প্রত্যেকেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের কেউ যদি নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় বা তাদের কেউ যদি অন্যকে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়, তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারী, রাজনৈতিক দলগুলো, সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ প্রত্যেকের আইনের শাসনকে সম্মান করা এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি সুন্দরবন, রাজশাহী ও কক্সবাজারসহ বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে তাঁর কিছু সফর ও কর্মকাণ্ডের কথাও স্মরণ করেন।

পিটার হাস বলেন, তিনি সর্বস্তরের বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং সিঙারা, বিরিয়ানি ও মিষ্টি দই ভালোবাসতে শিখেছেন।

XS
SM
MD
LG